গণধর্ষণ ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাটি চার বছর আগের

Published on: October 14, 2021

 ‘’লাভ জিহাদের ফাঁদে প্রাণ হারালেন সোমা বিশ্বাস ওরফে টুম্পা খাতুন’’ কিংবা এই জাতীয় কিছু বার্তা সম্বলিত একটি ছবি সম্প্রতি ফেসবুকের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে।  ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে, টুম্পা খাতুনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনাটা সত্য। তবে ২০১৭ সালে ঘটেছিল এই ঘটনা। সাম্প্রতিক কোনো ঘটনা নয় এটি।

বিভ্রান্তির উৎস

১০ই অক্টোবর ২০২১ তারিখ সকাল ৮ টা ৩৫ মিনিটে জাগ্রত যুব সংঘ পেজ থেকে এই ছবি আপলোড করা হয়েছিল বলে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে ।

কয়েক ঘন্টার মধ্যে অন্যান্য বিভিন্ন পেজ,গ্রুপ এবং ব্যক্তির প্রফাইলেও এই ছবিটা দেখা যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

ইমেজ সার্চের সহায়তা নিয়ে দেখা যাচ্ছে, কমপক্ষে ২ বছর আগে এই ছবি অনলাইনে আপলোড করা হয়েছিল।  ক্রাইমবার্তা ওয়েব পোর্টালে এই ছবিটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৯ সালের ১৬ই অক্টোবর।

এছাড়া ,২০১৭ সালের ১৩ই জুলাই একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই খবরটা দেখা যাচ্ছে । যেমন- প্রথম আলো , যুগান্তর , সময়ের কন্ঠস্বর , রাইজিং বিডি ইত্যাদি । তবে অধিকাংশ খবরে মূল ভিক্টিম এর ছবির বদলে প্রতীকি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে ।

প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বটবাড়ি গ্রামের সোমা বিশ্বাস (২৫) পাঁচ বছর আগে যাত্রাদলের নায়িকা হিসেবে দুর্গাপুর গ্রামে আসেন। তাঁকে সাতক্ষীরার খাজরা ইউপির চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমের সহযোগিতায় ধর্মান্তরিত করে টুম্পা খাতুন নাম দেওয়া হয়। পরে সাইফুল্লাহ গাজী তাঁকে বিয়ে করেন। সাইফুল্লাহ গাজীর আগেও এক স্ত্রী ছিল। মাস দুয়েক আগে দুর্গাপুরে যাত্রাপালা এনে দলটির এক মেয়েকে তৃতীয় বিয়ে করেন সাইফুল্লাহ। এ নিয়ে টুম্পার সঙ্গে সাইফুল্লাহর কলহ তৈরি হয়। গত ৯ জুন দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁদের বাগদা চিংড়ির হ্যাচারির বাসায় কয়েকজন লোক আসেন । ………… এরপর শাহানেওয়াজ ডালিমসহ ১৪-১৫ জন টুম্পাকে ধর্ষণ করেন। পরে কেরোসিন ঢেলে ও কাঁথায় জড়িয়ে টুম্পার শরীরে আগুন দেওয়া হয়। এরপর টুম্পাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন সাইফুল্লাহ। সেখান থেকে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ১৬ জুন টুম্পা মারা যান।

পরবর্তীতে অন্য এক খবরে জানা যাচ্ছে, ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আক্তারুল ইসলাম সকল আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল বাদি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজির আবেদন দাখিল করেন। …………………. ২০১৯ সালের ১৪ই নভেম্বর  মামলাটি পুলিশ ব্যুরো ইনভেসটিগেশনকে (পিবিআই) পূণ:তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।

২০১৯ এর নভেম্বরে পরে এই মামলার অন্য কোনো অগ্রগতি সম্পর্কে কোনো তথ্য ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে খুজে পাওয়া যায়নি।

ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত

ভাইরাল হওয়া ছবি এবং তথ্য সঠিক। তবে ঘটনাটি ৪ বছর আগের। সাম্প্রতিক সময়ে এই ছবি ভাইরাল হওয়ার ফলে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে। তাই ফ্যাক্টওয়াচকে এই সংক্রান্তক পোস্টকে ‘বিভ্রান্তিকর’ সাব্যস্ত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

Leave a Reply