বাংলাদেশ সরকার এই ত্রাণ পাঠিয়েছে গাজাবাসীর জন্য?

Published on: March 19, 2024

সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্টে “বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গাজাবাসীর জন্য” লেখা একটি ট্রাকের ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে রমজান উপলক্ষে যুদ্ধপীড়িত গাজাবাসীদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সাধারণ বাংলাদেশিদের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে ট্রাকে করে রমজানের তৃতীয় দিন গাজায় ত্রাণসহায়তা পৌঁছায়। এ কর্মসূচির সাথে বাংলাদেশ সরকার কোনোভাবে সংশ্লিষ্ট নয়। তাই বিভ্রান্তিকর ক্যাপশনের জন্য ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “বিভ্রান্তিকর” আখ্যা দিচ্ছে। 

বিভ্রান্তির উৎস

এ মাসের ১২ তারিখ থেকে এমন দাবিতে ফেসবুকে পোস্টটি শেয়ার করা হতে থাকে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

 

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান 

দি ডেইলি স্টার সংবাদপত্র থেকে ১৩ মার্চ প্রকাশিত “রমজানে গাজায় পৌঁছালো বাংলাদেশিদের ত্রাণ” শিরোনামের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পবিত্র রমজান মাসের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮০টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে দুই হাজার টন খাদ্যসহ ১০০ ট্রাকের একটি বহর মিশরের সীমান্ত দিয়ে গাজা উপত্যকায় পাঠানো হয়েছে। এর সাথে যুক্ত আলআজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হোজাইফা খানের বরাতে জানা যায়, গাজার মানুষের জন্য আলআজহার কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে রমজানের শুরুতেই বাংলাদেশি টাকায় মোট ৩৫ লাখ টাকার ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। এই অর্থ আলআজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা হিউম্যান ফার্স্ট, আজহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ হোয়াট পিগন ছাত্র সংগঠনগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন।

মিশরের Egypt TodayAhram নামক সংবাদপত্র দুটো থেকে জানা যাচ্ছে, মিশরের আলআজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের দাতব্য সংস্থা আলআজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি হাউজের মাধ্যমে গাজায় এই ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। এতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮০টি দেশের সাধারণ জনগণ অনুদান দিয়েছেন। সর্বোচ্চ অনুদান প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে।

ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে এ কর্মসূচির সাথে যুক্ত মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হোজাইফা খান এবং আবদুল্লাহ হাশেমের ফেসবুক প্রোফাইলে উক্ত ত্রাণ সহায়তা সম্পর্কিত ছবিযুক্ত পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে তারা উল্লেখ করেছেন – আমরা আযহারে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশি ভাইবোনদের অনুদান একত্র করে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে আল আযহারের মাধ্যমে এই পাঁচ লরি ত্রাণ গাযায় পাঠাতে সক্ষম হয়েছি।“ 

সংশ্লিষ্ট এ দুজন ব্যক্তির পোস্টের ট্রাকের ছবিটিই বিভ্রান্তিকর পোস্টে ব্যবহৃত হয়েছে।  

উপরোক্ত অনুসন্ধানের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয় যে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয় নি, বরং সাধারণ বাংলাদেশিদের অনুদানে এ ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। তাই বিভ্রান্তিকর ক্যাপশনের কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh