Published on: May 13, 2024
১০ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে বিকাশ সকল গ্রাহককে ৯৯৯৯ টাকা করে উপহার দিচ্ছে – এমন একটি পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এটি একটি প্রতারণামূলক ফাঁদ বা স্ক্যাম। বিকাশ কর্তৃপক্ষ থেকে এমন কোনো ঘোষণা আসে নি। পোস্টের সাথে যে ওয়েবসাইট লিংক যুক্ত করা হয়েছে তাতে প্রবেশ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বিকাশের লোগো ব্যবহার করে বানানো এই ভুয়া ওয়েবসাইটে ফিশিং(phishing) লিংকের মাধ্যমে বিকাশ গ্রাহকদের টাকা ও তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। এই ওয়েবসাইটগুলো সাম্প্রতিক অপর একটি স্ক্যামেও ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “মিথ্যা” আখ্যা দিচ্ছে। |
গুজবের উৎস
মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পোস্টটি ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান
বিকাশের ওয়েবসাইট এবং অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজের সাম্প্রতিক বিভিন্ন পোস্ট এবং অফার পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে তারা ১০ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে সকল গ্রাহককে কোনো প্রকার উপহার অফার করেনি। বিকাশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সেবার ওপর নিয়মিত যেসব অফার দেওয়া হয় সেসব ব্যতীত সকল গ্রাহককে কোনো লেনদেন ছাড়াই উপহার প্রদান-সংক্রান্ত কোনো ঘোষণা দেওয়া হয় নি।
বিকাশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ১০ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে তারা এমন কোনো উপহারের অফার দেয় নি। এগুলো প্রতারণামূলক মিথ্যা অফার যার সাথে বিকাশের কোনো সম্পর্ক নেই। বিভিন্ন প্রতারক চক্র বিকাশের নামে নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে নানা ধরনের মিথ্যা অফার দেখিয়ে বিকাশ গ্রাহকদের টাকা এবং বিভিন্ন তথ্য হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে থাকে।
বিকাশ কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিকাশের গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে ৬ কোটির বেশি। এর বাইরে গ্রাহকের নির্দিষ্ট সংখ্যাটি তাদের পক্ষ থেকে প্রকাশিত হয় নি। ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি একটি বিদেশী প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত সাক্ষাতকারে বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা কামাল কাদির জানিয়েছিলেন বিকাশের ভেরিফায়েড গ্রাহকসংখ্যা ৬ কোটি ৭ লক্ষের বেশি।
প্রতারণামূলক এই পোস্টগুলোর সাথে দুটো ভিন্ন অনিরাপদ আইপি অ্যাড্রেসযুক্ত ওয়েবসাইট সংযুক্ত করা হয়েছে। বিকাশের লোগো ব্যবহার করে বানানো ভুয়া ওয়েবসাইটগুলোয় প্রবেশ করে দেখা যাচ্ছে, সম্প্রতি দেশের সবাইকে বিকাশে ৫ হাজার টাকা করে উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী – এই স্ক্যামে ব্যবহৃত ভুয়া ওয়েবসাইটগুলোকেই নতুন স্ক্যামের ওয়েবসাইট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পূর্বের স্ক্যামটি সম্পর্কে জানুন এখানে।
ভুয়া ওয়েবসাইটগুলোর কার্যপ্রক্রিয়া থেকে স্পষ্ট যে, এর সাথে প্রতারণামূলক ফিশিং লিঙ্ক সংযুক্ত রয়েছে যাতে ক্লিক করলে গ্রাহকদের তথ্য ও টাকা প্রতারকদের হাতে চলে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ |