১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে গ্রাহকদের বোনাস দিচ্ছে বিকাশ?

Published on: April 24, 2024

১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিকাশ সকল গ্রাহককে ৯৯৯৯ টাকা করে বোনাস দিচ্ছে – এমন একটি পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এটি একটি প্রতারণামূলক ফাঁদ বা স্ক্যাম। বিকাশ কর্তৃপক্ষ থেকে এমন কোনো ঘোষণা আসে নি। এ বিষয়ে একাধিক সতর্কতামূলক পোস্টের সাথে সংযুক্ত স্ক্রিনশট থেকে প্রতীয়মান হয় যে, প্রতি বছরই একটি নির্দিষ্ট দিবস বা উপলক্ষকে কেন্দ্র করে বিকাশের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে সরাসরি গ্রাহকদের পিন নাম্বার অথবা ফিশিং(phishing) লিংকের মাধ্যমে গ্রাহকদের টাকা ও তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার মতোই এটি আরেকটা প্রচেষ্টা। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “মিথ্যা” আখ্যা দিচ্ছে। 

গুজবের উৎস

এপ্রিল মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে পোস্টটি ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। 

 

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

বিকাশের ওয়েবসাইট এবং অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজের সাম্প্রতিক বিভিন্ন পোস্ট এবং অফার পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে তারা ঈদ-পরবর্তী সময় বৈশাখ উপলক্ষে সীমিত কিছু দোকান এবং ই-কমার্সে নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্যছাড় অফার করছে। কিন্তু “১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সকল গ্রাহককে ৯৯৯৯ টাকা বোনাস প্রদান” সংক্রান্ত কোনো অফার নেই। 

এদিকে বিকাশ বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিলো ২০১১ সালের জুলাই মাসে, সে হিসেবে বিকাশের ১৫ বছর পূর্তি হওয়াও সম্ভব নয়। 

বিকাশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে তারা এমন কোনো বোনাসের অফার দেয় নি। এগুলো প্রতারণামূলক মিথ্যা অফার যার সাথে বিকাশের কোনো সম্পর্ক নেই। বিভিন্ন প্রতারক চক্র বিকাশের নামে নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে নানা ধরনের মিথ্যা অফার দেখিয়ে বিকাশ গ্রাহকদের টাকা এবং বিভিন্ন তথ্য হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে থাকে।

উক্ত ফেসবুক পোস্টগুলোয় সরাসরি কোনো ওয়েবসাইটের কোনো লিংক দেওয়া না থাকলেও কিছু সতর্কতামূলক পোস্ট (এখানে, এখানে, এখানে) পাওয়া যাচ্ছে যেখানে বিকাশের ভুয়া ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর যা যা ঘটবে সেগুলোর স্ক্রিনশট দেওয়া রয়েছে। 

এই স্ক্রিনশট থেকে প্রতীয়মান হয় যে এটি বিকাশের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে গ্রাহকের পিন নাম্বার হাতানো অথবা ফিশিং লিংকের মাধ্যমে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নেওয়ার একটি পুরোনো ও পরিচিত ফাঁদ। এ বছর জানুয়ারি মাসেও বিকাশের ১২ বছর পূর্তির উপলক্ষ দেখিয়ে এমন স্ক্যাম করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। এ সম্পর্কে ফ্যাক্টওয়াচের রিপোর্ট দেখুন এখানে। 

তাই সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে। 

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh