Published on: November 8, 2022
“এইমাত্র পাওয়া! মাশরাফির সব অবৈধ টাকা দিয়ে দিলেন এতিমখানায়। ক্ষেপে গেলেন প্রধানমন্ত্রী!” — এমন শিরোনামে একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটির কোনো সত্যতা নেই। শিরোনামের সাথে ভিডিওর কোনো মিল নেই। ভিডিওতে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার এতিম খানায় টাকা দান করার ব্যাপারে কিছুই বলা নেই। তাছাড়া, মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। |
ফেসবুকে ভাইরাল এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির শুরুতে দেশ টিভির একটি ভিডিও প্রতিবেদনের অংশ দেখানো হয়। এরপর ৬ সেকেন্ড থেকে অন্য একজন বক্তার বক্তব্য দেখানো হচ্ছে। তিনি মূলত মাশরাফির সম্পদের ব্যাপারে বলছিলেন। এরপর উপস্থাপক মাশরাফির বিরুদ্ধে দূর্নীতি এবং অবৈধ সম্পদের অভিযোগ সত্য কি না এ ব্যাপারে দুইটি ভিডিও যুক্ত করেছেন। প্রথম ভিডিওতে বক্তা মাশরাফির এসপিসি রিং আইডির সাথে সম্পৃক্ততার ব্যাপারে বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন মাশরাফি নাকি দুই শত কোটি টাকার বিনিময়ে রিং আইডি থেকে এসপিসিতে যোগদান করেছিলেন এবং এভাবে অবৈধ টাকার মালিক হয়েছেন। তিনি কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ দেখাতে পারেননি। এই অংশের ঠিক পরে দেশ টিভির একটি ভিডিও প্রতিবেদন যুক্ত করে দেয়া হয়। এই প্রতিবেদনেও মাশরাফির সম্পদের ব্যাপারে বলা হয়েছে। ক্রিক ট্র্যাকার নামের একটি ভারতীয় পোর্টালে প্রকাশ হওয়া একটি প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে দাবি করা হয় মাশরাফির সম্পদের পরিমাণ ৫১০ কোটি টাকা। কিন্তু এই তথ্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ সেখানে প্রকাশ করা হয়নি। ভিডিও দুটির কোথাও উল্লেখ নেই যে,এই অংশে মাশরাফি তার সব অবৈধ টাকা এতিম খানায় দান করেছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপারেও কোথাও কোনো কিছু বলা হয়নি।
প্রসঙ্গিক কিছু কী ওয়ার্ড সার্চ করে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে থাকা বক্তার বক্তব্যের মূল ভিডিওটি ইউটিউবে খুঁজে পাওয়া যায়। ক্রিক ট্র্যাকারে মাশরাফির সম্পদের পরিমাণ ৫১০ কোটি টাকা — তথ্য প্রমাণহীন এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হবার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং মূলধারার সংবাদমাধ্যম গুলোতে এ নিয়ে অনেক আলোচনা- সমালোচনা হয়। তখন এমডি তারেক রহমান নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটি পাওয়া যায়।
একই উপায়ে শেষ অংশে যুক্ত করা ভিডিওটিরও মূল উৎস খুঁজে পাওয়া যায়। মাশরাফি যখন তার বিরুদ্ধে উঠে আসা তথ্য প্রমাণহীন অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ তার নিজস্ব ফেসবুক পেজ থেকে স্ট্যাটাস দেন সেই ঘটনাকে ভিত্তি করে দেশ টিভি একই ভিডিও প্রতিবেদন করে। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
তাছাড়া, মাশরাফি এতিমখানায় কোনো কিছু দান করেছেন কি না এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য মূলধারার কোনো সংবাদমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সঙ্গত কারণে, ভিত্তিহীন এই দাবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান। |