এই পৃষ্ঠাগুলো নতুন পাঠ্যপুস্তকে নেই

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ৬ষ্ঠ এবং ৭ম শ্রেণীতে ইতিহাস ও সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের নতুন বই প্রবর্তন করা হয়েছে । এই পাঠ্যবইয়ে সংযোজিত নতুন কয়েকটি বিষয় এর কিছু পৃষ্ঠার দৃশ্য দাবি করে ফেসবুকে বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।  অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, মূল বইয়ে এই পাতাগুলো নেই, বরং এই ছবিগুলো এডিট করা হয়েছে। মূল বইয়ের সাথে মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, বইয়ের অন্যান্য পাতার আঙ্গিক এর সাথে এসকল পাতার আঙ্গিকেরও কোনো মিল নেই।

গুজব

এমন কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে  ।


ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলো থেকে দেখা যাচ্ছে, এখানে কয়েকটি বিষয় ( নগর বধূ, গুরু প্রসাদী, অঘোরি সাধু সমাজ , বর্ণ প্রথা , নরবলি, স্তনকর, সতীদাহ) নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিটি পাতায় একটি শিরোনাম এর পর একটি ছবি এবং তারপর এই বিষয়গুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এর ওয়েবসাইট থেকে নতুন প্রবর্তিত ষষ্টসপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান এর পাঠ্যপুস্তক যাচাই করে দেখা গেল, এই বইয়ের আঙ্গিক, লেখার ফন্ট, ছবি উপস্থাপন , রঙের ব্যবহার ইত্যাদি কোনো কিছুর  সাথেই অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ছবির কোনো মিল নেই।

নমুনা হিসেবে আসল বইয়ের কয়েকটি পাতার স্ক্রিনশট উপস্থাপন করা হল।


ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে ছবিগুলোতে বইয়ের কোনো পৃষ্ঠা নাম্বার দেখা যাচ্ছে না। তবে ছবির ওপরে এবং নিচে ‘সহমত ভাই’ নামক একটি ফেসবুক পেজের লোগো, এবং তাদের টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল এর আইডি নাম দেখা যাচ্ছে।

সহমত ভাই ০.২ নামক ফেসবুক পেজ থেকে দেখা যাচ্ছে, গত ৪ জানুয়ারি এই ৭ টি ছবি আপলোড করা হয়েছিল তাদের পেজ থেকে। এই পোস্টের ক্যাপশন ছিল- আমাদের অসাম্প্রদায়িক প্রগতিরা সপ্তম শ্রেনীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইতে যেসকল ইতিহাস তুলে ধরতে ভুলে গেছেন………

অর্থাৎ, ক্যাপশন থেকে এটা পরিষ্কার যে আপলোড করা ছবিগুলো নতুন পাঠ্যপুস্তকের নয়। বরং এগুলো এডিট করা ছবি, ট্রল করার উদ্দেশ্যে বানানো। তবে পরবর্তীতে এই ছবিগুলোকেই নতুন বইয়ের ছবি ভেবে অনেকে ছবিগুলো নতুনভাবে পোস্ট করেছেন।

এমনকি, কোনো কোন ফেসবুক ব্যবহারকারী সহমত ভাই ০.২ পেজের ছবিগুলোকেই নতুন বইয়ের ছবি ভেবে শেয়ার করেছেন । যেমন – এখানে , এখানে , এখানে


সার্বিক বিবেচনায় , এসকল ছবি এবং ভুল ক্যাপশনযুক্ত পোস্টগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ ‘মিথ্যা’ সাব্যস্ত করছে।