শিক্ষিকাকে বাচ্চা নিতে হলে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি লাগবে?

Published on: February 20, 2023

কোনো শিক্ষিকাকে বাচ্চা নিতে হলে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি লাগবে- শিরোনামে সম্প্রতি একটি খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত ফেসবুক পোস্টগুলোতে কোনো ধরণের আনুষঙ্গিক তথ্য কিংবা সূত্রের উল্লেখ নেই। অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এটি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। এক শিক্ষিকা সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করতে গিয়ে বাচ্চা নিতে অনুমতির বিষয়টি তুলে ধরেন। কিন্তু ভাইরাল এসব পোস্টে মূল ঘটনার বিবরণ না থাকায় অনেকেই এই অভিযোগকে একটি সরকারি সিদ্ধান্ত ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তাই কোনো ধরণের অনুষঙ্গ ছাড়া এসব ফেসবুক পোস্টগুলোকে বিভ্রান্তিকর চিহ্নিত করা হয়েছে।

এমন কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

 ফেসবুক পোস্টে থাকা প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে অনুসন্ধান করা হলে দৈনিক যুগান্তর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। “কোনো শিক্ষিকা বাচ্চা নিলে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিতে হবে!” শিরোনামে ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এ প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের শিরোনামের সাথে ভাইরাল এসব পোস্টের মিল পাওয়া যায়। যদিও ফেসবুক পোস্টগুলোতে কোনো ধরণের সূত্র উল্লেখ ছাড়াই এই শিরোনামটি প্রকাশিত হচ্ছে। মূল প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি নওগাঁর মহাদেবপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। স্কুলের কয়েকজন শিক্ষিকা তাদের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেন। সহকারী শিক্ষিকাসহ ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতির সঙ্গে অশালীন আচরণসহ অন্যান্য অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়। উক্ত প্রতিবেদনে আরোও বলা হয়, শিক্ষিকারা এমনও অভিযোগ করেন যে, কোনো শিক্ষিকা কখন বাচ্চা নেবেন তাও উক্ত প্রধান শিক্ষকের অনুমতিসাপেক্ষে করতে হবে। মূলত এই প্রতিবেদনের এই অংশটিই ভাইরাল হয়েছে। উক্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এমন লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন। এছাড়া এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান যে, অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে।

কোনো সূত্র কিংবা অনুষঙ্গ ছাড়া এই অংশটি ভাইরাল হওয়ায় অনেকেই এটিকে একটি সরকারি সিদ্ধান্ত হিসেবে ধরে নিচ্ছেন এবং এর সমালোচনা করছেন। সাধারণ ব্যবহারকারীদের অনেকে এটিকে জাতীয় সিদ্ধান্ত ভেবেও বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তাদের কেউ কেউ এটিকে অসাংবিধানিক বলেও দাবি করছেন।

বিভ্রান্তির কিছু নমুনা দেখুনঃ



 অর্থ্যাৎ, একজন প্রধান শিক্ষিকের বিরুদ্ধে সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের যৌন হয়রানির অভিযোগকে এমনভাবে প্রকাশ করা হয়েছে যে, অনেকেই সেটিকে এক ধরনের আইন বা সিদ্ধান্ত ভেবে নিচ্ছেন। উক্ত পোস্টের সাথে মূল প্রতিবেদনের কোনো সূত্র কিংবা আনুষাঙ্গিক তথ্য না থাকায় এমন বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় এসব ফেসবুক পোস্টগুলোকে “বিভ্রান্তিকর” চিহ্নিত করা হয়েছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh