চট্টগ্রাম একুশে বইমেলায় ‘ইসকন’ কি স্টল বরাদ্দ পেয়েছে ?

Published on: February 25, 2022

চট্টগ্রাম একুশে বই মেলায় হিন্দু ধর্মভিত্তিক সংগঠন ‘ইসকন’ কে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মর্মে ফেসবুকে কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, চট্টগ্রাম বইমেলায় ইসকন অর্থাৎ আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ – International Society for Krishna Consciousness –(ISKCON) কে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি । ঢাকার একুশে বইমেলায় ইসকন স্টলের বর্তমান এবং পুরনো  ছবিকেই চট্টগ্রাম-এর ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে ।

গুজবের উৎস

ভাইরাল হওয়া কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

এই পোস্টে দাবি করা হয়েছে, চট্টগ্রাম বইমেলায় ইসলামিক কোনো বই নেই ,তবে ইসকন এর স্টল রয়েছে।

স্ট্যাটাসের সাথে যে ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে , ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে দেখা গেল, এটা ২০২০ সালের ঢাকা বইমেলার ছবি। সে সময় এই ছবিটা সহ ইসকনের স্টল নিয়ে একটি প্রতিবেদন দৈনিক নয়া দিগন্তে প্রকাশিত হয়েছিল ।

অর্থাৎ ইসকনের স্টলের এই ছবিটা চট্টগ্রাম বইমেলার ছবি নয়, বরং ঢাকার ছবি বলে প্রমাণ পাওয়া গেল।

ভিন্ন আরেকটি ছবি দেখিয়ে দাবি করা হচ্ছে, চট্টগ্রামে বই মেলায় ইসকনের “ইস্টল” [স্টল] রয়েছে।

ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেখা গেল, এই ছবিটা চলতি ২০২২ সালের ঢাকা বইমেলায় ইসকনের স্টল এর ছবি। পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ-Lord Krishna পেজ থেকে গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে এই ছবি সহ মোট ১০ টি ছবি আপলোড করা হয়েছিল। ক্যাপশনে জানানো হয়েছিল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৭০১ নাম্বার স্টলে ইসকনের বইয়ের স্টল রয়েছে।

ঢাকার একুশে বইমেলার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকেও দেখা যাচ্ছে, এ বছরের মেলায় ৭০১ নাম্বার স্টলটি ইসকন কে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ।

তবে চট্টগ্রাম একুশে বইমেলার ৯২ টি প্রকাশনী (সিঙ্গেল ও ডাবল ইউনিট মিলিয়ে ১০৭ টি স্টল) এর নামের তালিকা চট্টগ্রাম একুশে বই মেলার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। এসব স্টলের তালিকায় ইসকন এর নাম পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, ঢাকার একুশে বইমেলায় এবার ৭৭৬ ইউনিট স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সর্বমোট ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে। এর মধ্যে একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানের জন্য রয়েছে ১৪২টি স্টল।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৬৩৪টি স্টল দেওয়া হয়েছে ৪৩২ প্রতিষ্ঠানকে। এর সঙ্গে প্যাভিলিয়ন রয়েছে ৩৫টি। একটু দূরে দূরে পুরো অংশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্যাভিলিয়নগুলোকে। উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের পাশে মেলার মূল প্রাঙ্গণে আলাদা করে ১২৭টি স্টল বরাদ্দ করা হয়েছে লিটল ম্যাগাজিনের।

অর্থাৎ, চট্টগ্রাম বই মেলার চেয়ে ঢাকার বই মেলা ৭ গুন বা তার চেয়েও বড়। স্বাভাবিকভাবেই ঢাকা বইমেলায় বেশি সংখ্যক স্টল বরাদ্দ পেয়েছে এবং বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্যের দিক দিয়েও  ঢাকা বই মেলায় বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনীর সমাবেশ দেখা যাচ্ছে।

এরই পটভূমিকায় চট্টগ্রামের বইমেলাকে নিয়ে গুজব রটেছে যে মেলায় কোনো ইসলামিক বই নেই বা ইসলামিক বইয়ের স্টল নেই। তবে মেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি নিছক গুজব। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, চট্টগ্রামের এই মেলায় কমপক্ষে ৫ টি ইসলামিক বইয়ের স্টল রয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত দেখুন ফ্যাক্টওয়াচের এই প্রতিবেদনে

তবে ঢাকার একুশে বইমেলায় ইসলামি বই বা বইয়ের স্টল নিষিদ্ধ-এমন দাবি কেউ কখনো করেনি।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

 

Leave a Reply