অকেজো হয়ে যায়নি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ

Published on: November 19, 2022

“মহাকাশের বিস্ময়কর ছবি তোলার পরেই অকেজো হয়ে গেল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ” – সম্প্রতি এমন শিরোনামে একটি সংবাদের পোস্ট পাওয়া যাচ্ছে ফেসবুকে। নাসার রিপোর্ট অনুযায়ী, গত মে মাসে একটি ছোট উল্কার আঘাতে টেলিস্কোপের একটি গোল্ড প্লেটেড আয়না ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ অকেজো হয় নি, বরং প্রত্যাশার চেয়েও ভালো পারফর্ম করছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই দাবিকে মিথ্যা শিরোনাম আখ্যা দিচ্ছে।

 

বিভ্রান্তির উৎস

এমন কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

বিখ্যাত বিজ্ঞানবিষয়ক ওয়েবসাইট Live Science ১৯ জুলাই প্রকাশিত রিপোর্টে বলেছে, গত বছর ২৫ ডিসেম্বর কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯টি মহাকাশীয় শিলা (space rock) দ্বারা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। নাসা তাদের সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, এ বছর মে মাসের ২৩ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে একটি ছোট আকারের শিলার (micrometeoroid) আঘাতে টেলিস্কোপের একটি গোল্ড প্লেটেড আয়না ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নাসা এ ক্ষতিকে ‘অসংশোধনযোগ্য’ (uncorrectable) বলছে। তবে এটি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের কার্যক্রমকে একটুও ব্যাহত করেনি, বরং টেলিস্কোপটি বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ফলাফল দিচ্ছে! অর্থাৎ জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ মোটেও অকেজো হয় নি, বরং মহাকাশে ভালোভাবে কার্যরত রয়েছে।

ছোট ছোট শিলার আঘাত দিয়ে যেকোনো স্পেসক্রাফটের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া অনিবার্য – বিজ্ঞানীরা এটা জানেন। তাই মহাকাশে যেকোনো যান পাঠানোর আগে বিজ্ঞানীরা সেটিকে সেভাবেই পরীক্ষা করে পরিকল্পনামতো মহাকাশে পাঠান। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ বানানোর সময় ইঞ্জিনিয়াররা ছোট সাইজের শিলার সমান বস্তু দিয়ে বিভিন্ন আয়নার স্যাম্পলকে আঘাত করে করে টেলিস্কোপের পারফর্ম্যান্সের ওপর এর প্রভাব পরীক্ষা করেছেন। তবে যে সাইজের শিলা দিয়ে এই টেলিস্কোপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা বিজ্ঞানীদের ধারণার চাইতে কিছুটা বড় ছিল। অর্থাৎ জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ মোটেও রহস্যজনকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়নি, বরং শিলা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি আগে থেকেই অনুমিত ছিল।

 

Live Science ছাড়াও টেকনোলজি ও বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট Boy Genius Report তাদের রিপোর্টে একই কথা বলছে। এছাড়া এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য আরো রিপোর্ট দেখুন এখানে, এখানে

 

 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১২ জুলাই মহাবিশ্বের প্রাচীনতম অবস্থার (১ হাজার ৩০০ কোটি বছর আগে) সবচেয়ে বিস্তারিতভাবে প্রথম সম্পূর্ণ রঙিন ছবি তুলে আলোচনায় আসে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh