অস্ত্রধারী ব্যক্তিটি পুলিশ কর্মকর্তা সৌমেন রায় নন

Published on: October 25, 2021

সম্প্রতি “কুষ্টিয়াতে হিন্দু পুলিশ কমকর্তা সৌমেন কুমার রায় প্রকাশ্যে গুলি করে মুসলিম স্বামী-স্ত্রীসহ ৬ বছরের শিশুকে হত্যা করেছে” শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিটি মূলত ১৬ আগস্ট ২০১৫ সালে ঘটে যাওয়া কুষ্টিয়ায় শোক দিবসে আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের। অপরদিকে ২০২১ সালের জুন মাসে কুষ্টিয়ায় বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জের ধরে বাংলাদেশ পুলিশের একজন এএসআই সৌমেন রায় তার স্ত্রী, সৎ ছেলে এবং অপর এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেন। দুটি পৃথক ঘটনাকে একত্র করে ভুলভাবে উপস্থাপন করার কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে


ছবিতে যে লোকটিকে অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তিনি কি পুলিশ কর্মকর্তা সৌমেন কুমার রায়?

প্রথম আলোর ১৭ আগস্ট ২০১৫ সালের প্রতিবেদন থেকে জানা যায় অস্ত্রবহনকারী ব্যক্তিটি হলেন পুলিশের চাকরিচ্যুত এএসআই আনিচুর রহমান ওরফে আনিচ। প্রায় দেড় বছর আগে ঢাকার পল্লবী থানায় থাকার সময় ফেনসিডিল আত্মসাতের দায়ে তাঁর চাকরি যায়।

সুতরাং, এটি স্পষ্ট যে ভাইরাল হওয়া ছবির লোকটি পুলিশ কর্মকর্তা সৌমেন কুমার রায় নয়, তিনি আনিচুর রহমান আনিচ। আনিচুর রহমান আনিচ এর ছবি ব্যবহার করে তাকে সৌমেন কুমার রায় হিসেবে প্রচার করা হয়।

ছবি: সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া পোস্টে দাবীকৃত সৌমেন রায়ের ছবিটি মূলত আনিচুর রহমান ওরফে আনিচ এর

ছবি: এএসআই সৌমেন রায়

সৌমেন রায় বিষয়ে ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজ এর প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত জানা যায়।  ক্যাপশনের দাবি অনুযায়ী সৌমেন কোনো মুসলিম স্বামী-স্ত্রীকে হত্যা করেন নি। দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিডি ডট কম অনুযায়ী, সৌমেন কুমার রায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে তিনি বিকাশ এজেন্ট শাকিলের সাথে তার স্ত্রী আসমার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক মেনে নিতে পারেন নি। একই প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, আসমার ভাই হাসান বলেছেন তার বোন ছিল সৌমেন এর দ্বিতীয় স্ত্রী। সুতরাং এটি স্পষ্ট যে, আসমা এবং বিকাশ এজেন্ট শাকিল স্বামী-স্ত্রী ছিল না।

ক্যাপশনে আরো বলা হয় “৬ বছরের শিশুকে হত্যা করেছে”, কিন্তু দি ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন থেকে জানা যায় শিশুটির বয়স ছিল ৭।

উপরোক্ত তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে ফ্যাক্টওয়াচ সিদ্ধান্ত দেয় যে, ছবিটি পুলিশ কমকর্তা সৌমেন কুমার রায় এর নয়; ছবিটি আনিচুর রহমান আনিচ এর। ছবি ও ক্যাপশনটি সম্পূর্ণ ভুল পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবহৃত হওয়ায় ভাইরাল ছবিটির দাবী-কে ফ্যাক্টওয়াচ মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

 

Leave a Reply