“ইউনেস্কোর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট চলে মেসির দানে” – মিথ্যা

Published on: December 27, 2022

বিল গেটস কিংবা ‘সিআর সেভেন নয় ইউনেস্কোর চ্যারিটেবল ট্রাস্টের ৪৮ শতাংশ চলে মেসির দানে, “– এমন শিরোনামে একটি তথ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এই তথ্যটির কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে সংস্থাটির শীর্ষ দাতা বা দাতা সংস্থাগুলোর তালিকায় মেসি বা তার চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানটির নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, সেখানে বিল গেটসের অনুদান সম্পর্কে উল্লেখ আছে। এছাড়া, মূলধারার কোনো সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সোর্স থেকে ইউনেস্কোতে মেসির অনুদান সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ফেসবুকে ভাইরাল এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

এসব পোস্টে “Doynik Batra BD” নামের ওয়েবপোর্টালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন শেয়ার করা হচ্ছে। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

“ইউনেস্কোর আয়ের একটি অন্যতম উৎস হচ্ছে মেসির অনুদান যা বিল গেটস এবং রোনালদোর ক্ষেত্রে তা নয়” ফেসবুকে প্রচারিত এই তথ্যের সত্যতা জানতে ইউনেস্কোর ওয়েবসাইট অনুসন্ধান করা হলেও লিওনেল মেসির সাথে সংস্থাটির কোনো সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু, ইউনেস্কোর শীর্ষ দাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের নাম খুঁজে পাওয়া যায়। ইউনেস্কোতে মেসি কিংবা কিংবা তার দাতব্য সংস্থা লিও মেসি ফাউন্ডেশনের অনুদান যদি বিল গেটসের থেকে বেশিই হত তাহলে এই তালিকায় অবশ্যই তার নাম খুঁজে পাওয়া যেত। অন্যদিকে ইউনেস্কোর চ্যারিটেবেল ট্রাস্ট নামে সুনির্দিষ্ট কোনো সংস্থা আছে কি না এ ব্যাপারে ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, মেসির সাথে ইউনিসেফের সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়। মেসির দাতব্য সংস্থা লিও মেসি ফাউন্ডেশন ইউনিসেফের সাথে সম্পৃক্ত থেকে সুবিধা বঞ্চিত অনেক শিশুদের সাহায্য করেছে। যেমনঃ যুদ্ধধ্বস্ত সিরিয়ার শিশুদের আবার ক্লাসরুমে ফিরিয়ে আনা, হাইতি এবং নেপাল সহ অন্যান্য দেশে শিশুদের জন্য বিভিন্ন কর্যক্রম পরিচালনা করা , ইত্যাদি।

দেখা যাচ্ছে যে, ইউনেস্কো বা ইউনিসেফের মত সংস্থাগুলোর সাথে বিশ্বের সুপরিচিত কোনো ব্যক্তিত্ব বা তাদের দাতব্য সংস্থা যুক্ত থাকলে তার উল্লেখ এদের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।

অন্যদিকে, ভাইরাল হওয়া পোস্টে শিরোনামে সাথে যুক্ত বিস্তারিত অংশে মেসি সম্পর্কে প্রচারিত কিছু তথ্যে অসঙ্গতি খুঁজে পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মেসির বার্ষিক আয়। ভাইরাল পোস্টগুলোতে বলা হচ্ছে মেসির বার্ষিক আয় ভারতীয় মুদ্রায় ৩০০ কোটি টাকা । কিন্তু ফোর্বসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় মেসি হচ্ছেন সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত অ্যাথলেট যিনি বছরে ১৩০ মিলিয়ন বা ১৩০০ লাখ মার্কিন ডলার আয় করেন। ভারতীয় রূপিতে রূপান্তর করলে তা দাঁড়ায় ১০ বিলিয়ন রূপির কিছু বেশি, যা ফেসবুকে প্রচার হওয়া সংখ্যার থেকে ভিন্ন।

সঙ্গত কারণে, ভিত্তিহীন এই দাবিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh