ভারতের শিশুকে রংপুরের “সাইমা” দাবি করে আর্থিক সাহায্যের নামে প্রতারণা

Published on: September 26, 2022

সম্প্রতি “সাইমা” নামের একটি শিশুর চিকিৎসার জন্য ৪ লাখ টাকার একটি তহবিল সংগ্রহের আবেদন ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, শিশুটির আসল নাম “মানহা”, বয়স- ১ বছর এবং সে একজন ভারতীয়। “Impact Guru” নামক একটি ভারতীয় তহবিল সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।

ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ এবং পেজ থেকে শেয়ার হওয়া অসুস্থ শিশুটির ছবি সংবলিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে।

ভাইরাল হওয়া এই ফেসবুক পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়, “সাইমা” নামের শিশুটি “ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ডিসঅর্ডার” নামের একটি রোগে আক্রান্ত, তার চিকিৎসার জন্য ৪ লাখ টাকার প্রয়োজন। ফেসবুক পোস্টে ব্যবহৃত বিকাশ এবং নগদ একাউন্টের একটি নাম্বারে ফ্যাক্টওয়াচ যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

ভাইরাল এই পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত ছবিগুলো দিয়ে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে, আর্থিক সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহকারী একটি প্রতিষ্ঠান “Impact Guru” এর ওয়েবসাইটে একটি আবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। “I’m Manha & You Can End My SMA Story” শিরোনামের এই আবেদনে ব্যবহৃত শিশুর ছবির সাথে বর্তমানে ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত শিশুর ছবির মিল পাওয়া যায়। আবেদনটি থেকে জানা যায়, শিশুটির প্রকৃত নাম “মানহা”, এবং তার বয়স এক বছর। মানহা Spinal Muscular Atrophy (SMA) নামের একটি রোগে আক্রান্ত এবং ভারতের Sri Ganga Ram Hospital এ চিকিৎসারত।

বাংলাদেশী শিশু বলে দাবিকৃত ফেসবুক পোস্টগুলোতে বলা হয়েছে, “শিশুটির বাবা একটি কম্পানির সামান্য বেতনের বিক্রয়কর্মি  ইতিমধ্যে ওর চিকিৎসা করাতে গিয়ে ওর বাবার গ্রামে যা জমি ছিল সব শেষ। তাই এখন নিরুপায় হয়ে দেশবাসীর কাছে হাত পেতেছেন”। বাস্তবে ভারতীয় শিশু মানহা’র আর্থিক সাহায্যের আবেদনে উল্লেখ আছে যে তার বাবা নেই।

Impact Guru এর ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব একাউন্ট থেকে মানহা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন এখানে, এবং এখানে।

উপরোক্ত তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বর্তমানে ফেসবুকে ভাইরাল এই শিশুটির পরিচয় ভুলভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। শিশুটির ভুল নাম এবং অসুস্থতা ব্যবহার করে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে ফ্যাক্টওয়াচ থেকে এমন কিছু আর্থিক সাহায্যের নামে প্রতারণামূলক ফেসবুক পোস্ট নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।

উপরোল্লিখিত তথ্যগুলোর ভিত্তিতে ফ্যাক্টওয়াচ এই পোস্টগুলোকে মিথ্যা চিহ্নিত করছে।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh