হলিউড অভিনেতা মরগান ফ্রিম্যান ইসলাম গ্রহণ করেন নি

Published on: November 22, 2022

প্রখ্যাত আমেরিকান অভিনেতা মরগান ফ্রিম্যান সম্প্রতি ইসলাম গ্রহণ করেছেন — এই মর্মে একটি খবর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এই খবরের কোনো সত্যতা নেই । দেশ বিদেশের একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা একে গুজব হিসেবে সনাক্ত করেছে।

গুজবের উৎস

মূলত আরবি এবং ইংরেজি ভাষায় করা কিছু টুইট থেকে এই গুজবটির উৎপত্তি।

জাকির নায়েক এর একটি আনভেরিফাইড টুইটার একাউন্ট থেকে গত ২১শে নভেম্বর ভোর ৪ টা ২২ মিনিটে মরগান ফ্রিম্যান এর ইসলাম গ্রহণের ঘোষণার কথা জানানো হয়।

এই টুইটের স্ক্রিনশট ব্যবহার করে বাংলা ভাষাতেও অনেকে মরগান ফ্রিম্যান এর ইসলাম গ্রহণের খবর জানাচ্ছেন। যেমন দেখুন এখানে , এখানে , এখানে

জনৈক শফিকুল ইসলাম শফিক তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ ❤️

আমেরিকান বিখ্যাত অভিনেতা মরগান ফ্রিম্যান ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছেন ।

আল্লাহু আকবার 🥰

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

মরগান ফ্রিম্যান এর ভেরিফাইড টুইটার একাউন্ট এ সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ম পরিবর্তন সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুজে পাওয়া গেল না।

২০১৯ সালে হলিউড রিপোর্টার এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে মরগান ফ্রিম্যান নিজের ধর্মবিশ্বাস পরিবর্তন করে জরাথ্রুস্টবাদ গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছিলেন । তবে সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে ইসলাম নিয়ে বা তার ধর্ম পরিবর্তন নিয়ে কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে তিনি ডিসকোভারি চ্যানেলের প্রযোজনায় The Story of God নামে একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণ করেছিলেন। এই ডকুমেন্টারিতে বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান এবং ধর্মতত্ত্ববিদদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানের ইসলাম সম্পর্কিত বিভিন্ন ক্লিপ এবং শুটিং এর ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে মরগান ফ্রিম্যান ইসলাম গ্রহণ করেছেন মর্মে গুজব ছড়িয়েছিল। যেমন-২০১৬ সালের এই প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, লন্ডনের একটি মসজিদে মরগান ফ্রিম্যান শুটিং এর জন্য গমন করলে তার ইসলাম গ্রহণ নিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়।

গত ২০শে নভেম্বর কাতারে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে কাতারের ২২ বছর বয়সী গানিম আল মুফতাহ এর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন মরগান ফ্রিম্যান , যেখানে গানিম কাতারের ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরিধান করেছিলেন এবং কথোপকথনের এক পর্যায়ে তিনি কোরআন শরীফ থেকে প্রাসঙ্গিক একটি আয়াত তেলাওয়াত করেছিলেন। এই ঘটনাটাই সাম্প্রতিক মরগান ফ্রিম্যানের ইসলাম গ্রহণের গুজবের সূত্রপাত হতে পারে।

আরব ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা misbar ইতিমধ্যে এই ঘটনাকে গুজব হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। বাংলাদেশের রিউমর স্ক্যানার ও এই গুজবটি সনাক্ত করেছে ।

তাই সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ বাংলা ভাষায় ছড়িয়ে পড়া এ সংক্রান্ত পোস্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করছে ।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh