ওবায়দুল কাদেরের মৃত্যুর গুজব

Published on: January 23, 2023

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মারা গিয়েছেন- এমন একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, একবছর আগের সময় টিভির একটি প্রতিবেদনকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে তার মৃত্যুর খবরটি জুড়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের নিজে এগুলোকে ‘নোংরামি’ বলে সমালোচনা করেছেন।

এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

ভাইরাল এই ভিডিওতে দাবি করা হয়, “আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বুকে ব্যাথাসহ শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮২ বছর “।

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

ভাইরাল এই ভিডিওতে “সময় সংযোগ” এবং “বিজয় ৫০” নামে দুইটি লোগো দেখতে পাওয়া যায়। এসব প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ডের সাহায্যে অনুসন্ধান করা হলে সময় টিভির একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। “বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ওবায়দুল কাদের” শিরোনামে ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১ এ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। সেসময় ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। ভাইরাল ভিডিওর বিভিন্ন দৃশ্যগুলো মূলত এই প্রতিবেদন থেকে নেয়া হয়েছে। নিম্নোক্ত স্ক্রিনশটের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করা হলো-

ভাইরাল ভিডিও

মূল ভিডিও

ভাইরাল ভিডিও

মূল ভিডিও

দুইটি ভিডিওর অডিও লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, মূল প্রতিবেদনে উপস্থাপিকা বলছেন, “আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বুকে ব্যাথাসহ শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন”। কিন্তু মূল প্রতিবেদনের “ভর্তি হয়েছেন” কথাটির জায়গায় “মারা গেছেন” কথাটি জুড়ে দেয়া হয়েছে।

অর্থ্যাৎ, ওবায়দুল কাদেরের অসুস্থতা নিয়ে তৈরি ১ বছর পুরনো একটি প্রতিবেদনকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে বিকৃত করে তার মৃত্যুর খবরটি তৈরি করা হয়েছে।

 

পুনরায় অনুসন্ধানে এমন গুজবের প্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়। সাইবার আইনে এর বিপরীতে কোনো ব্যবস্থা নিবেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,” আমি এসব পাত্তা দেই না, আমি এগুলোতে গুরুত্ব দেই না, এই নোংরামিগুলো এখন সারা দুনিয়াতে হচ্ছে”। তিনি আরোও বলেন, “ কুকুরের কাজ কুকুরে দিয়েছে কামড় দিয়েছে পায়, তাই বলে কুকুরকে কামড়ানো কি মানুষের শোভা পায়?”

এছাড়া মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা ওবায়দুল কাদেরের অফিসিয়াল কোনো মাধ্যম থেকেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এর আগেও ওবায়দুল কাদের নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়েছে ফেসবুকে। সেগুলো নিয়ে ফ্যাক্টওয়াচের কয়েকটি প্রতিবেদন পড়ুন এখানে, এখানে এবং এখানে

 

সুতরাং, প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত এমন ভিত্তিহীন দাবিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” চিহ্নিত করছে।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh