নওগাঁর স্কুলের হিজাব বিতর্কে ছড়ানো হচ্ছে পুরনো ভিডিও

Published on: April 10, 2022

৯ এপ্রিল ২০২২ তারিখে “নওগাঁ হিজাব নিষিদ্ধ নামাজ শেষেই যার হাতে যা আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পরেছে।“ ক্যাপশনে ১৮ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার হয়েছে। মূলত ভিডিওটি নওগাঁর নয়, গত ১ এপ্রিল (শুক্রবার) বিকেলে রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানে শহীদ মতিউর রহমান পার্কে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ নামক একটি দলের সমাবেশের। পুরনো ভিডিও ভুল প্রেক্ষাপটে প্রচার করায় সঙ্গত কারণেই ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে। 

সম্প্রতি উক্ত ক্যাপশনে শেয়ার হওয়া কিছু ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, মূল ভিডিওটি ৩ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের। একই ভিডিও বার বার জোড়া লাগিয়ে ভিডিওটির দৈর্ঘ্য বাড়ানো হয়েছে। ভিডিওর শুরুতে বলা হয়েছে, “নওগাঁর ২০ শিক্ষার্থীকে হিজাব পরিধান করার কারণে পিটিয়েছে এক হিন্দু শিক্ষিকা, যে কারণে কিন্তু নামাজ শেষে রাজপথে নেমে এসেছে চরমোনাইসহ সকল রাজনৈতিক তৌহিদি জনতা”। ভিডিওর ৩ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডে দেখা যায়, ঘটনাস্থলের একটি সাইনবোর্ডে “গুলিস্তান” শব্দটি। এর ভিত্তিতে গুগলে বিভিন্ন কী-ওয়ার্ড দিয়ে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, এই সমাবেশের স্থানটি হলো ঢাকার গুলিস্তান শহীদ মতিউর রহমান পার্ক (গুলিস্তান পার্ক)। গুগল ম্যাপে উক্ত পার্কের একটি গেটের ছবি দেখুন এখানে।

ছবি: ভাইরাল ভিডিও তে দৃশ্যমান গুলিস্তান শহীদ মতিউর পার্ক


ছবি: গুগল ম্যাপে দৃশ্যমান গুলিস্তান শহীদ মতিউর পার্ক

একাধিক সংবাদ সূত্রে জানা যায়, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদসহ ৫ দফা দাবিতে রাজধানীতে এই মহাসমাবেশ করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন দলের আমীর চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। প্রথমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল দলটি। তবে শেষপর্যন্ত অনুমতি না পাওয়ায় পরে গুলিস্তানে শহীদ মতিউর রহমান পার্কে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।


ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত এ নিয়ে নাগরিক টিভি ও বাংলাভিশনের দুটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।

 

এছাড়াও উক্ত সমাবেশের দুটি ইউটিউব ভিডিও দেখুন এখানে এবং এখানে।

উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘হিজাব পরার কারণে’ ছাত্রীদেরকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল এর বিরুদ্ধে, যদিও তিনি এটি কে বলছেন ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার’। তিনি আরও বলেছেন, স্কুল ইউনিফর্মের নিয়ম না মানায় তিনি কয়েকজন ছাত্রীকে ‘শাসন’ করেছেন, সেখানে হিজাবের কোনো বিষয় ছিল না।

এদিকে গতকাল উক্ত শিক্ষিকাকে অপসারণ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ নওগাঁ জেলা শাখা।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

Leave a Reply