লকডাউনে সিএনজি অটোরিকশা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে?

Published on: [July 2, 2021]

১৪ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে । ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার খনন কাজে নিয়োজিত এক্সক্যাভেটর দিয়ে বেশ কিছু সিএনজি অটোরিকশা গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে । দাবি করা হচ্ছে, ১লা জুলাই ২০২১ এর কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে বের হওয়ার কারণে এই সিএনজিগুলোকে শাস্তি হিসেবে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এটা সাম্প্রতিক লকডাউনের ভিডিও নয়। ২০১৮ সালের  এপ্রিল মাসে  বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি) বেশ কিছু মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি চালিত অটোরিক্সা  ধ্বংস করেছিল। এই ভিডিও তেমনই একটি পুরনো অটোরিকশা ধ্বংসের ভিডিও।

 

উৎস

১লা জুলাই সকাল ১০:২৩ মিনিটে আধুনিকা নামের ফেসবুক পেজে এই ভিডিও প্রথম আপলোড করা হয় বলে ফ্যাক্টওয়াচ দেখতে পেয়েছে।

ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, গরিবের গাড়ি ভাঙ্গার খেলায় মেতেছে!!!লকডাউনে গাড়ি বের করার শাস্তি দেখে অবাক জনগণ।

এটাকে ১লা জুলাই এর ভিডিও মনে করে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বিভ্রান্ত হতে থাকেন। খুব দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এই ভিডিও।

এই ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে এমন কয়েকটা পেজ/গ্রুপ দেখুন  এখানে , এখানে , এখানে , এখানে ,এখানেএখানে , এখানে ,এখানে ,এখানে

এমনকি কয়েকটা ফেসবুক পেজ এই ভিডিওটাকে বিশেষ এ্যাপ এর সাহায্যে ‘লাইভ ভিডিও’ হিসেবে ফেসবুকে টেলিকাস্ট করেছে। এই ফেসবুক লাইভ দেখে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী এটাকে সরাসরি সম্প্রচার মনে করেছে। এমন কয়েকটা ভুয়া লাইভ ভিডিও দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

২০১৮ সালের ২৪শে এপ্রিল ইউটিউবে মূল ভিডিওটা খুজে পাওয়া যায়। All Around Me নামক চ্যানেল থেকে CNG Auto Rickshaw Destroying in BRTA office Dhaka Bangladesh part 2 শিরোনামে এই ভিডিওটি আপলোড করা হয়।

তবে এই ভিডিওটি ছিল ১৪ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের। এখান থেকে প্রথম ২২ সেকেন্ডের ভিডিও বাদ দিয়ে আধুনিকা পেজে ১৪ মিনিট ১৮ সেকেন্ড আপলোড করা হয়েছে। প্রথম ২২ সেকেন্ড বাদে ভিডিওর বাকি অংশে মিল রয়েছে।

২০১৮ সালের ১লা এপ্রিল থেকে বিআরটিএ মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি চালিত অটোরিকশা ধ্বংস করার একটি কার্যক্রম শুরু করেছিল। মূল অটোরিক্সার ইঞ্জিন ,গ্যাস সিলিন্ডার এবং নাম্বার প্লেট খুলে রেখে অটোরিক্সার খোলসটি এক্সক্যাভেটর (excavator) এর সাহায্যে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৫ বছরের চেয়ে বেশি পুরনো অটোরিকশা এভাবে মালিক/চালকের উপস্থিতিতে ধ্বংস করার পরে কিছু কাগজপত্র সত্যায়ন সাপেক্ষে মালিক আবার নতুন অটোরিকশা কেনার অনুমতি পেয়েছিল।  এ সম্পর্কিত খবর এবং ছবি /ভিডিও সে সময় সংবাদপত্রগুলোতে ছাপা হয়েছিল। যেমন – এখানে, এখানে, এখানে

সিদ্ধান্ত

ভাইরাল ভিডিওর ঘটনা সত্য, তবে এটি সাম্প্রতিক লকডাউনের কোনো ঘটনা নয়। এটি ৩ বছর আগের ভিডিও বলে ফ্যাক্টওয়াচ প্রমাণ পেয়েছে।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

Leave a Reply