প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ সংক্রান্ত একটি বিভ্রান্তিকর খবর ভাইরাল

Published on: January 12, 2022

সম্প্রতি “প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ সংকট সমাধানের পথ সহজ করবেঃ বিবিসি” এমন শিরোনামে ইনকিলাবের একটি প্রতিবেদনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি কমপক্ষে ০৭ ডিসেম্বর ২০১৩ সাল অর্থাৎ আট বছর আগের। দৈনিক ইনকিলাবের টুইট এবং বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই ফ্যাক্টওয়াচ পুরনো এই খবরকে “বিভ্রান্তিকর” চিহ্নিত করছে।

এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে


ছবিটি দেখে মনে হচ্ছে এটি দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার একটি খবরের স্ক্রিনশট। সেখানে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানের পথ সহজ করবে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ।

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

ছবিতে থাকা বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করার পর ফেসবুকে পূর্বে প্রকাশিত বেশ কিছু ফেসবুক পোস্ট পাওয়া যায়।

এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

এখানে “Faraeji Andolon- ফরায়েজী আন্দোলন” নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে বর্তমানে ভাইরাল ছবিটির সন্ধান পাওয়া যায়। ০৭ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে প্রকাশিত এই ফেসবুক পোস্ট থেকে পরিষ্কার বুঝা যায় ছবিটি সাম্প্রতিক নয়। বরং অন্তত আট বছর পুরনো।

পরবর্তীতে এমন খবরের সত্যতা জানতে উক্ত ছবিটি দিয়ে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়নি। এরপর প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে গুগলে সার্চ করা হলে ০৭ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে “The Daily Inqilab” প্রকাশিত একটি টুইট পাওয়া যায়।

উক্ত টুইটে শিরোনামের সাথে একটি লিংক যুক্ত করা হলেও সেখানে এই সংক্রান্ত কিছু পাওয়া যায়নি। এছাড়াও দৈনিক ইনকিলাবের ওয়েবসাইট থেকেও এমন কোনো খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এই টুইটের শিরোনামটি এবং বর্তমানে ভাইরাল খবরের শিরোনামটি একই।

অন্যদিকে বর্তমানে ফেসবুকে ভাইরাল ছবিটি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, সেখানে খবরের সূত্র হিসেবে বিবিসির একটি প্রতিবেদনকে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ করা হলে ৬ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে প্রকাশিত “Election divisions push Bangladesh towards the brink” শিরোনামে বিবিসির ওই প্রতিবেদনটি পাওয়া যায়।

একই বিষয় নিয়ে রিউমার-স্ক্যানারের আরেকটি ফ্যাক্ট-চ্যাক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণে দেখানো হয় যে, বর্তমানে ভাইরাল ছবিটির শিরোনামটি বিবিসির উপরোক্ত প্রতিবেদন থেকেই নেওয়া হয়েছে।

তবে ইনকিলাবের মূল প্রতিবেদনটি কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এদিকে পুরনো এই ছবিটি সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়লে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তির তৈরি হয়। অনেকেই খবরটিকে সাম্প্রতিক বলে মনে করছেন।

বিভ্রান্তির নমুনা


অতএব, পরিষ্কারভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, বর্তমানে ভাইরাল ছবিটি প্রায় আট বছর আগের। এমন একটি খবরের শিরোনামে টুইট কিংবা সূত্র খুঁজে পাওয়া গেলেও মূল খবরটি পাওয়া যায়নি। উক্ত খবরকে অনেকেই সাম্প্রতিক ভেবে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। তাই অন্তত আট বছর আগের এই খবরটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” চিহ্নিত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

Leave a Reply