প্রধানমন্ত্রী কি ছাত্রলীগকে “অস্বীকার” করেছেন?

Published on: August 30, 2022

সম্প্রতি একটি ভাইরাল ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগকে অস্বীকার করেছেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ৯ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেছিলেন। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর সেই বক্তব্যটির একটি অংশ শেয়ার করে বলা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগকে অস্বীকার করছেন”।  সংক্ষিপ্ত বক্তব্যটি  শুনে এমন ধারণা আসা স্বাভাবিক যে প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের বিরূদ্ধে কথা বলেছেন। কিন্তু আদতে তেমনটা ঘটে নি। 

ফেসবুকে সম্প্রতি শেয়ার হওয়া কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

ভাইরাল ভিডিওটির বিস্তারিত জানতে বিভিন্ন কী-ওয়ার্ড সার্চে  ৯ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের একটি পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য পাওয়া যায়।  ১০ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড বক্তব্যটির ৩ মিনিট অংশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরেন। বক্তব্যটিতে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী-লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের কথাও তুলে ধরেন। এখানে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যে আওয়ামী-লীগের “অঙ্গসংগঠন” না — সে বিষয়টি পরিষ্কার করেন। তাঁর বক্তব্য আওয়ামী-লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী “অঙ্গসংগঠন” বলে কিছু নেই, যা আছে তা হল “সহযোগী সংগঠন” এবং “ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন”। আওয়ামী-লীগের সহযোগী/ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে বাংলা ট্রিবিউন থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পড়ুন এখানে

উল্লেখ্য, ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে প্রকাশিত বক্তব্যটির একটি ক্ষুদ্র অংশ বর্তমানে ফেসবুকে ভাইরাল করা হয়েছে।

ভাইরাল ভিডিওটির দ্বারা বিভ্রান্তি সৃষ্টির কারণ:

ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশন থেকে নেয়া ফুটেজটিতে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী বলছেন ছাত্রলীগ আওয়ামি লীগের অঙ্গসংগঠন নয়। এর পরপরই তিনি বলেছিলেন যে, ছাত্রলীগ  একটি  স্বতন্ত্র ছাত্রসংগঠন। এই অংশটি ভাইরাল ফুটেজ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ফলে, ঐ বক্তব্যটি শুনলে মনে হবে যেন প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের বিরূদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আদতে তিনি আওয়ামি লীগের অঙ্গ সংগঠনজনিত বিভ্রান্তি নিরসন করতে চেয়েছিলেন। ছাত্রলীগের বিরূদ্ধে কোনো বক্তব্য দেন নি।

তাছাড়া বক্তব্যটির মধ্যে ব্যবহৃত ক্যাপশনে বলা হয়েছে, ১৫ আগস্ট ২০২২ তারিখে বরগুনা জেলা পুলিশের লাঠিচার্জের পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু ফুটেজটি আসলে ২০১৯ সালের এবং ভিন্ন প্রেক্ষিতের।

সঙ্গত কারণেই ফ্যাক্টওয়াচ এসব দাবিকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh