দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার ভ্যানচালক শাহীন কি মারা গেছে?

Published on: February 7, 2023

ছিনতাইকারীদের হামলায় গুরুতর আহত ভ্যানচালক শাহীন অবশেষে মারা গেছে – এমন একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, ২০১৯ সালে ছিনতাইকারীদের হাতে গুরুতর আহত ভ্যানচালক কিশোর শাহীন পর্যায়ক্রমে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেসময় আহত শাহীনের রক্তমাখা ছবি ফেসবুকে আলোড়ন তোলে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেন এবং তিন মাস পর শাহীন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে। কিন্তু ঘটনার দু বছর পরেও একাধিকবার শাহীন মারা যাওয়ার গুজবটি ছড়িয়েছে।

গুজবের উৎস

২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে এ গুজবটি প্রথমবার ফেসবুকে ছড়ানো শুরু করে। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে পুনরায় গুজবটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ঘটনাটি ২০১৯ সালের। একাধিক পত্রিকা থেকে জানা যাচ্ছে, যশোরের কেশবপুরের গোলাঘাটা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহীন ২০১৯ সালের ২৮ জুন ছিনতাইকারীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়। ছিনতাইকারীরা যাত্রীবেশে ভ্যান ভাড়া করে যাত্রাপথে একটি পাটক্ষেতের পাশে শাহীনের মাথায় আঘাত করে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে শাহীনকে উদ্ধার করে প্রথমে সাতক্ষীরা হাসপাতাল, এরপর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ভর্তি করা হয় (এ সংক্রান্ত খবর দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে)।

ঘটনার পর ভাইরাল হওয়া কিছু ফেসবুক পোস্ট

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহীনের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। মাথায় অস্ত্রোপচারের পর শাহীনকে আইসিউতে রাখা হয় এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক হাসপাতালে তাকে দেখতে যান। (এ সংক্রান্ত খবর দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে)

পরবর্তীতে শাহীনের ওপর হামলাকারী ৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এ সংক্রান্ত খবর দেখুন এখানে, এখানে, এখানে

গণমাধ্যমের সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী দীর্ঘ তিন মাস হাসপাতালে কাটানোর পর শাহীন সুস্থ হয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর বাড়িতে ফিরেছে। এ সংক্রান্ত খবর দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। পরবর্তীতে শাহীন পুনরায় অসুস্থ হয়েছে, বা শারীরিক জটিলতা দেখা দিয়েছে – এমন কোনো সংবাদ পাওয়া যায় নি।

গণমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, দেড় বছর পর একই উপজেলায় ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইদ্রিস আলী নামক এক কিশোরকে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করেছিলো দুর্বৃত্তরা (দেখুন এখানে, এখানে, এখানে)। স্পষ্টতই, এই কিশোর ভিন্ন ব্যক্তি।

দেখা যাচ্ছে শাহীন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলো এবং তার মৃত্যু-সংবাদের কোনো ভিত্তি নেই। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh