সাপের জীবাশ্ম নয়, এগুলো আসলে পাথরের ছবি

Published on: May 7, 2023

সম্প্রতি “পাওয়া গেল সবচেয়ে বড় সাপের জীবাশ্ম, হতবাক বিজ্ঞানীরা” শিরোনামে কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, থাইল্যান্ডের বুয়েং খং লং জেলায় অবস্থিত ফু লাংকা ন্যাশনাল পার্কের “নাকা গুহা” থেকে ছবিগুলো নেওয়া হয়েছে। নাকা গুহার বিশেষত্ব হল গুহার ভেতরে একটি বিশালাকার সাপ বা সাপের দেহের মতো আকৃতির একটি পাথর দেখতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ ছবিগুলো কোনো সাপের ফসিলের বা জীবাশ্মের নয়। এছাড়া এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে বড় সাপের জীবাশ্মটির নাম Titanoboa cerrejonensis বা Titanic Boa.

 

এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান: 

ভাইরাল ছবিগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত জানতে রিভার্স ইমেজ সার্চের সাহায্য নেয়া হয়। সেখানে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, থাইল্যান্ডের একটি ন্যাশনাল পার্কের “নাকা গুহা” নামক স্থানের ছবি এটি। থাইল্যান্ডের একটি জনপ্রিয় ট্যুরিজম সাইট Thailand Tourism Directory ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আর্টিকেল থেকে তথ্যটির সত্যতা মিলেছে। ওয়েব সাইটটিতে বলা হয়েছে, সাপের দেহের মতো আকৃতির একটি পাথর এটি। এই পাথরের উপরের অংশের আবরণও অনেকটা সাপের আঁশের মতো দেখতে। ভূতত্ত্বের পরিভাষায়, এটি পৃথিবীর পৃষ্ঠের শিলা দ্বারা তৈরি হয়েছিল। পর্যায়ক্রমে গরম-ঠাণ্ডা তাপমাত্রা পরিবর্তনের মাধ্যমে, শারীরিক প্রক্রিয়াগুলি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। শিলাকে ঘিরে থাকা পৃষ্ঠের ফাটলগুলিকে সূর্যের ফাটল বলে। অর্থাৎ ছবিগুলো কোনো সাপের জীবাশ্মের নয়।

 

এছাড়া এখনো পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপের জীবাশ্মের বিষয়ে তথ্য জানতে জানতে বিভিন্ন কী-ওয়ার্ড সার্চ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে বড় সাপের জীবাশ্মটি 2009 সালে উত্তর কলম্বিয়ার একদল বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছিলেন। তারা জীবাশ্মটি Titanoboa cerrejonensis, থেকে খুঁজে পেয়েছিলেন সংক্ষিপ্ত আকারে যা Titanic Boa নামে পরিচিত। জীবাশ্মটির আকারের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা মনে করেছেন সবচেয়ে বড় সাপটি ছিল ৪৩ ফুট লম্বা এবং ওজন ছিল ২,৫০০ পাউন্ড। এটিকে এখনো পর্যন্ত পৃথিবীর সবথেকে বড় সাপের জীবাশ্ম হিসেবে ধরা হয়। AZ ANIMALS নামের

প্রাণী বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে দেখুন এখানে

সুতরাং ভিন্ন একটি স্থানের পাথরের ছবিকে সবচেয়ে বড় সাপের জীবাশ্ম বলা হয়েছে। যে কারণে এমন তথ্যগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh