এই ছবিতে শ্রীকৃষ্ণ কি রোজাদারদের ঈদের চাঁদ দেখাচ্ছিলেন?

Published on: April 24, 2023

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি পেইন্টিং শেয়ার দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, এখানে শ্রীকৃষ্ণ নাকি রোজাদারদের বা মুসলিমদের ঈদের চাঁদ দেখাচ্ছেন! ছবিটা সম্পর্কে বলা হচ্ছে, এটি ষোড়শ শতকের এবং ভারতের রাজস্থানে পাওয়া গেছে। প্রকৃতপক্ষে, ছবিটার বাস্তবতা ভিন্ন। ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব এশিয়ান আর্ট এর মতে, উক্ত পেইন্টিংটির বিষয়বস্তু হল, শ্রীকৃষ্ণ কংস রাজাকে পরাজিত করে তার দত্তক পরিবারের সাথে মিলিত হয়েছেন এবং ভগবত পুরাণে বর্ণিত একটি সূ্র্যগ্রহণ উপভোগ করছেন। এছাড়াও, কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ দাবি করছেন, উক্ত পেইন্টিংটিতে শ্রীকৃষ্ণের পেছনে সাদা শ্মশ্রুমন্ডিত যে ব্যক্তিকে একজন মুসলিম ভাবা হচ্ছে তিনি আসলে শ্রীকৃষ্ণের পালক পিতা। তার পরিধেয় পোশাকের নমুনার সাথে নন্দ অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের পালক পিতার পোশাকের মিল পেয়েছেন তারা। তবে কোনো বিশেষজ্ঞই এই ছবির বিশ্লেষণে রোজাদারদের ঈদের চাঁদ দেখানোর কোনো প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন নি। সঙ্গত কারণে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টের দাবিকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করার পাশাপাশি ফ্যাক্টওয়াচ এই বিষয়ে একটি ফ্যাক্ট-ফাইল তৈরি করেছে।

সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত এমন কিছু পোস্টের নমুনা দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে

Image: Example of a viral Facebook post.

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পেইন্টিংটির বিবরণে যে দাবিটি করা হচ্ছিলো তার সত্যতা যাচাই করতে আমরা উক্ত পেইন্টিংটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি এবং সার্চের ফলাফলে বেশ কয়েকটি প্রাসঙ্গিক নিবন্ধ খুঁজে পাই। স্ক্রল ইন্ডিয়া এর একটি নিবন্ধে উক্ত পেইন্টিংটিকে অষ্টাদশ শতকের পাহাড়ি পেইন্টিং এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং নিবন্ধটিতে আরও বলা হয়েছে যে, পেইন্টিংটি ভগবত পুরাণের বিভিন্ন পর্ব নিয়ে আঁকা অন্যান্য পেইন্টিংগুলোর অনুরূপ।

সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পেইন্টিংটিতে শ্রীকৃষ্ণের পাশে দাঁড়ানো সাদা জামা ও লাল স্ট্রিপড পায়জামা পরিহিত এবং মাথায় পাগড়ি বাঁধা লোকটিকে দেখে অনেকেই তাকে মুসলিম বলে ভেবেছেন এবং বিবরণে লিখেছেন যে, শ্রীকৃষ্ণ মুসলিমদের ঈদের চাঁদ দেখাচ্ছেন। আমরা ঐ সাদা জামা ও পায়জামা এবং মাথায় পাগড়ি পরিহিত ব্যক্তিটি কে হতে পারেন তা যাচাই করেছি। স্ক্রল ইন্ডিয়ার এর ঐ নিবন্ধটিতে পাহাড়ি পেইন্টিং এর “The Road to Brindaban” এবং “The Cremation of Putana” শিরোনামের দুটো পেইন্টিং এর সাথে শ্রীকৃষ্ণের কথিত ঈদের চাঁদ দেখানোর পেইন্টিংটি তুলনা করা হয়েছে। “The Road to Brindaban” পেইন্টিংটিতে দেখা যাচ্ছে গোকুলের বাসিন্দারা কংস রাজার অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে বৃন্দাবন পালিয়ে যাচ্ছে এবং শ্রীকৃষ্ণ এবং তার ভাই বলরাম একটি গরুর গাড়িতে গোলাপি চাঁদোয়ার নিচে বসে আছে। উক্ত পেইন্টিংটিতে লাল চাঁদোয়ার নিচে সাদা জামা, রঙিন পায়জামা, এবং মাথায় পাগড়ি পরিহিত একজন ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে যিনি কিনা পুরো দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণের পালক পিতা নন্দ, যিনি গোকুলের রাজা বা নন্দ রাজা নামেও পরিচিত। উক্ত ব্যক্তিটির সাথে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পেইন্টিংটিতে দেখতে পাওয়া সাদা জামা ও লাল ডোরাকাটা পায়জামাপরা ব্যক্তিটির বেশ মিল আছে। তাছাড়া, পরবর্তীতে আমরা আরও কিছু পাহাড়ি পেইন্টিং দেখতে পাবো যেখানে ঐ একই ধরনের কাপড়-পরা ব্যক্তিকে উপস্থিত থাকতে দেখা যাবে।

Image: Nanda Raja (Yellow lined), Krishna (Red lined).

 

“The Cremation of Putana” শিরোনামের একটি পেইন্টিং এ দেখা যাচ্ছে, পূতনা নামক এক রাক্ষসীক বধ করার পর বালক শ্রীকৃষ্ণকে মা যশোদার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং যশোদার সহচরীরা দুষ্ট প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখতে শ্রীকৃষ্ণকে গরুর লেজ দিয়ে বাতাস দিচ্ছে । পৌরাণিক বর্ণনা অনুযায়ী, পুতনা একজন মহিলার ছদ্মবেশে এসে বিষাক্ত দুধ খাইয়ে কৃষ্ণকে হত্যা করতে চেয়েছিলো উক্ত পেইন্টিংটিতে লাল চাঁদোয়ার নিচে বসে রঙিন জামা এবং পাগড়ি পরিহিত নন্দ রাজাকে রাক্ষসী পূতনার মৃতদেহ সৎকারের আদেশ দিতে দেখা যাচ্ছে। 

পাহাড়ি পেইন্টিং এর অন্তর্ভুক্ত ভগবত পুরাণ এর বিভিন্ন পর্ব ব্যাখ্যা করে আঁকা পেইন্টিংগুলো ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে প্রত্যেকটি পেইন্টিং এ নন্দ রাজার শ্মশ্রু (Beard) এর বর্ণ পরিবর্তন হচ্ছে। যেমন: “The Cremation of Putana” শিরোনামের পেইন্টিংটিতে নন্দ রাজার শ্মশ্রুর বর্ণ যখন ঘন কালো তখন শ্রীকৃষ্ণ একজন বালক, “The Road to Brindaban” শিরোনামের পেইন্টিংটিতে বৃন্দাবনে গমনের সময় নন্দ রাজার শ্মশ্রুতে একটু পাকা ভাব লক্ষ্য করা গেছে, এবং যে পেইন্টিংটিকে বলা হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ চাঁদ দেখাচ্ছেন সেখানে নন্দ রাজার শ্মশ্রু একদম পেকে সাদা হয়ে গেছে। অর্থাৎ, সময়ের সাথে সাথে নন্দ রাজার বয়স বেড়েছে এবং তার শ্মশ্রুর বর্ণেও পরিবর্তন এসেছে।

অপইন্ডিয়া এর একটি নিবন্ধের মারফত আমরা বিবেক কুমার মিশ্র নামক একজন টুইটার ব্যবহারকারীর সন্ধান পেয়েছি যিনি ভগবত পুরাণ এর পর্বগুলো নিয়ে আঁকা আরও কয়েকটি পেইন্টিং সামনে এনে সেগুলোতে দেখতে পাওয়া রাজকীয় পোশাক পরিহিত ব্যক্তিটির সাথে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পেইন্টিংটির সাদা জামা, লাল ডোরা পায়জামা ও পাগড়িপরা এবং সাদা দাড়ি-অলা ব্যক্তিটির তুলনা করেছেন। বিবেক কুমার মিশ্র তার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ১৬ই জুন ২০১৮ এ একটি থ্রেড চালু করেন এবং সেখানে তিনটি পেইন্টিং দেখিয়ে শ্রীকৃষ্ণ যে মুসলিমদের ঈদের চাঁদ দেখাচ্ছেন না তা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন। তার আপলোডকৃত একটি পেইন্টিং এ দেখা যায়, শ্রীকৃষ্ণ এবং তার ভাই বলরাম আকাশের দিকে আঙুল তুলে তাদের সঙ্গীদের বৃন্দাবন দেখাচ্ছেন। উক্ত পেইন্টিংটিতে সাদা জামা, মাথায় পাগড়িরা, এবং সাদা দাড়িঅলা একজন ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে, যিনি নন্দ রাজা। তাছাড়া, ঐ পেইন্টিংটিতে দেখতে পাওয়া শ্রীকৃষ্ণ এবং বলরামের মাথার মুকুট এবং পরিহিত পোশাকের সাথে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পেইন্টিংটির শ্রীকৃষ্ণ এবং বলরামের মুকুট ও পোশাকের মিল রয়েছে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, দুটো পেইন্টিংই একই সিরিজের অন্তর্ভুক্ত এবং সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পেইন্টিংটিতে উপস্থিত নন্দ রাজাকে মুসলিম কোন ব্যক্তি ভেবে ভুল করে শ্রীকৃষ্ণ মুসলিমদের ঈদের চাঁদ দেখাচ্ছেন বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তা সঠিক নয়।

Image: Nanda Raja (Green lined), Krishna (Red lined), and Balarama (Blue lined).

 

বিবেক কুমার মিশ্র তার ঐ টুইটার থ্রেডটিতে স্যান ডিয়েগো আর্ট মিউজিয়াম এবং হার্ভার্ড আর্ট মিউজিয়াম এর রেফারেন্স দিয়ে দুটো ছবি আপলোড করেন যেখানে দেখা যাচ্ছে বালক কৃষ্ণ এবং বলরামকে গোসল করানো হচ্ছে এবং পাশে শ্মশ্রুমন্ডিত ও পাগড়িরা একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছেন, যিনি কৃষ্ণের পালক পিতা নন্দ রাজা।

Image: Nanda Raja (Red lined), Krishna (Yellow lined), and Balarama (Green lined).

 

অতএব, ভগবত পুরাণের বিভিন্ন পর্ব ব্যাখ্যা করে যে পেইন্টিংগুলো আঁকা হয়েছিলো তার মাঝে যেগুলো আমরা দেখলাম সেখানে গোকুলের নন্দ রাজা বা কৃষ্ণের পালক পিতার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে এবং তাকে একজন মুসলিম ভেবে ভুল করা হয়েছে। 

ইন্ডিয়া টুডে এর একটি নিবন্ধে বিশিষ্ট শিল্প ইতিহাসবিদ বি.এন. গোস্বামী সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পেইন্টিংটিতে দেখতে পাওয়া মুসলিম পোশাক এবং পাগড়ি পরিহিত বৃদ্ধ লোকটি সম্পর্কে বলেছেন যে, “ঐ ব্যক্তিটি হচ্ছে কৃষ্ণের পালক পিতা নন্দ এবং তিনি যে একটি হিন্দু পোশাক পরে আছেন তার সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পোশাকটি বাম বগলের (Armpit) নিচে বাঁধা হয়েছে। অন্যদিকে, মুঘল আমলে মুসলিমরা সবসময় ডান বগলের নিচে পোশাক বাঁধতেন।”

Image: Excerpt from India Today’s article.

 

ইন্দু চন্দ্রশেখর নামক একজন প্রকাশক কৃষ্ণ এবং মুসলিম নর-নারীর ঈদের চাঁদ দর্শন বিষয়ক পেইন্টিংটি নিয়ে বি.এন. গোস্বামী এর কাছে জানতে চাইলে উত্তরে তিনি বলেন, এই পেইন্টিংটি রাজস্থানের নয় বরং, অষ্টাদশ শতকে পাহাড়ি পেইন্টিং এর শিল্পী মানাকু (Manaku) এবং নৈনসুখ (Nainsukh) পরবর্তী প্রথম প্রজন্মের কোন শিল্পীর আঁকা এটি। তিনি আরও বলেন, ভগবত পুরাণ বা উক্ত পুরাণকে কেন্দ্র করে আঁকা পেইন্টিং সিরিজে কোন মুসলিম চরিত্রের উপস্থিতি অসম্ভব এবং যখনই আমরা ভগবত পুরাণ সিরিজের খন্ডাংশগুলোতে নন্দ রাজাকে দেখবো তখনই তিনি বাম বগলে বাঁধা পোশাক এবং মাথায় পাগড়ি পরে উপস্থিত হবেন। তিনি আরও যোগ করে বলেন, আমি জানিনা এই খন্ডাংশটির আসল পেইন্টিং কোথায় আছে এবং যদি তা বের করা যায় তাহলে ঐ সিরিজের অন্যান্য খন্ডাংশগুলোর মতোই তার উল্টো পাশের লেখা থেকে বিস্তারিত জানা যাবে।

পরবর্তীতে পেইন্টিংটি খুঁজে পাওয়া যায় এবং জানা যায় যে এটি অষ্টাদশ শতকে নৈনসুখ পরবর্তী প্রথম প্রজন্মের শিল্পীর আঁকা কাঙরা, যা পাহাড়ি পেইন্টিং নামেও পরিচিত, পেইন্টিং। দেখুন এখানে

Image: Excerpt from National Museum of Asian Art.

 

সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পেইন্টিংটিতে শ্রীকৃষ্ণ আকাশের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে কি দেখাচ্ছিলেন তার দুটো বিবরণ পাওয়া গেছে। বি.এন. গোস্বামী এর মতে, ভগবত পুরাণের ২৮তম অধ্যায়ের দশম স্কন্ধে নন্দ রাজাকে বরুণ (আকাশের দেবতা) এর হাত থেকে মুক্ত করার পর শ্রীকৃষ্ণ তাকে এবং তার জ্ঞাতিগোষ্ঠিকে মায়াশক্তি ব্যবহার করে তাঁর নিজস্ব রাজ্য দেখান। ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব এশিয়ান আর্টস এর একটি নিবন্ধ অনুযায়ী, দুষ্ট কংস রাজাকে পরাজিত করার পর শ্রীকৃষ্ণ এবং বলরাম তার দত্তক পরিবারের সাথে পুনরায় মিলিত হয় এবং তারা একত্রে একটি সূর্যগ্রহণ অবলোকন করে, যা ভগবত পুরাণে বর্ণিত হয়েছে। 

Image: Excerpt from National Museum of Asian Art’s article.

 

অতএব, এই বিষয়টি স্পষ্ট যে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পেইন্টিংটিতে যে বৃদ্ধ ব্যক্তির পোশাক দেখে তাকে মুসলিম ভেবে ভুল করা হয়েছিলো তিনি ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের পালক পিতা, নন্দ রাজা এবং উক্ত পেইন্টিংটিতে শ্রীকৃষ্ণ যে মুসলিমদের ঈদের চাঁদ দেখাচ্ছিলেন তারও কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টের দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।

সংশোধনী: এই প্রতিবেদনের সারাংশ অংশে “উক্ত পেইন্টিংটিতে যাকে শ্রীকৃষ্ণ ভাবা হচ্ছে, তিনি আসলে শ্রীকৃষ্ণের পালক পিতা” বাক্যটির স্থানে “উক্ত পেইন্টিংটিতে শ্রীকৃষ্ণের পেছনে সাদা শ্মশ্রুমন্ডিত যে ব্যক্তিকে একজন মুসলিম ভাবা হচ্ছে তিনি আসলে শ্রীকৃষ্ণের পালক পিতা”  বাক্যটি বসিয়ে সংশোধন করা হয়েছে। রেটিং অপরিবর্তিত রয়েছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh