বাংলাদেশে ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের মত ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এই নিয়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও বেশ সমালোচনা করা হচ্ছে। এই আবহে সম্প্রতি ফেসবুকে এক নারীর ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে যেখানে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন সদৃশ কিছু দেখা যাচ্ছে। ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ছে। কিছু ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে বাংলাদেশে তিনি ধর্ষনের শিকার হয়েছেন। আবার কোথাও দাবি করা হচ্ছে এই নারী দেশে অতিরিক্ত ধর্ষণের বিরুদ্ধে নিজের স্তন উন্মুক্ত করে প্রতিবাদ করেছেন। মূলত এই ভিডিওকে বাংলাদেশে চলমান সহিংসতার একটি উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত এই নারী ধর্ষিত হননি। তিনি মূলত ভারতের একজন অভিনেত্রী এবং ২০২০ সালে লকডাউন চলাকালীন এই অভিনয়ের ভিডিও নিজের পেজ থেকে শেয়ার করেছিলেন। সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় ভাইরাল পোস্টগুলো বিভ্রান্তিকর।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির উৎস খুঁজে পাওয়ার জন্য শুরুতেই এর বিভিন্ন কি-ফ্রেম দিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হয়। এর ফলে থিয়েটার ক্যাফে নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে আলোচিত ভিডিওর অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। কিঙ্কিণী সেনগুপ্ত সরকার (Kinkini Sengupta Sarkar) নামের এক নারী ১০ মে ২০২০-এ ভিডিওটি শেয়ার করেছিলেন। সেখানে তিনি একটি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে উল্লেখ করেছিলেন “#lockdownpractice”। তখন করোনা মহামারীর জন্য সারা বিশ্বে লকডাউন চলছিলো।
পরবর্তীতে, কিঙ্কিণী সেনগুপ্ত সরকারের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গিয়েও আলোচিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায় যেটি ১০ মে ২০২০-এ শেয়ার করা হয়। কিঙ্কিণী সেনগুপ্ত সরকারের অন্যান্য ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা নারীর চেহারার মিল পাওয়া যায়। পাশাপাশি এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায় তিনি ভারতের কলকাতার বাসিন্দা এবং একজন অভিনেত্রী। তিনি মূলত তার অভিনয়ের মাধ্যমে একজন ধর্ষিতাকে তুলে ধরেছিলেন এবং ধর্ষনের প্রতিবাদ করেছিলেন।
অর্থাৎ, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার নয়। অতএব, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল পোস্টগুলোকে ‘বিভ্রান্তিকর’ হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।
Claim: সম্প্রতি ফেসবুকে এক নারীর ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে যেখানে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন সদৃশ কিছু দেখা যাচ্ছে। কিছু ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে বাংলাদেশে তিনি ধর্ষনের শিকার হয়েছেন। আবার কোথাও দাবি করা হচ্ছে এই নারী দেশে অতিরিক্ত ধর্ষণের বিরুদ্ধে নিজের স্তন উন্মুক্ত করে প্রতিবাদ করেছেন।
Claimed By: Facebook users
Rating: Mostly false
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh