সম্প্রতি “নিজের সতীত্ব রক্ষা করতে নিজের বাবাকে কুপিয়ে খুন করল মেয়ে” শিরোনামে কয়েকটি অনলাইন পোর্টাল থেকে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মূল সংবাদটি ভারতের উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলায় ঘটে যাওয়া দুই বছরের পুরনো একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তবে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া সংবাদে যে ছবিটি ব্যবহৃত হয়েছে সেটি ২০২০ সালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মাকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যাকারী মেয়ে তামান্না জেবীন রুমানার ছবি। ছবিতে দৃশ্যমান ব্যক্তির সাথে উক্ত সংবাদটির কোনো সম্পর্ক নেই।
সম্প্রতি ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে সংবাদটি শেয়ার হতে দেখা যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে।
উক্ত সংবাদটির বিস্তারিত অংশ ধরে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া সংবাদটির সিংহভাগ ১৯ জুন ২০১৯ তারিখে কালের কন্ঠ থেকে প্রকাশিত একটি সংবাদ থেকে কপি করা হয়েছে। সংবাদটি ছিল মূলত ভারতের উত্তরখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার বরকোট এলাকার এক তরুণীকে নিয়ে যিনি ঘুমন্ত অবস্থায় ধর্ষণের চেষ্টা করায় নিজের বাবাকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছিলেন। পরবর্তীতে পুলিশ ওই তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছিল।
এ নিয়ে সেসময় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস, এই সময় এবং দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া থেকে প্রকাশিত সংবাদগুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
অপরদিকে, সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া সংবাদটিতে ব্যবহৃত ছবিটি গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া সংবাদে যে ছবিটি ব্যবহৃত হয়েছে সেটি ২০২০ সালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মাকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যাকারী মেয়ে তামান্না জেবীন রুমানার ছবি। নয়া দিগন্ত থেকে প্রকাশিত এ বিষয়ক একটি সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, নিহত নাছরিন ফিরোজা (৫৬) ছেলে রিয়াজ ও মেয়ে তামান্নাকে নিয়ে বসবাস করতেন। সকালে মা ও বোনকে বাসায় রেখে রিয়াজ বোনের জন্য ডাক্তার আনতে যান। এ সময় তামান্না রান্নাঘরে বটি দিয়ে মা ফিরোজাকে কুপিয়ে হত্যা করে। সংবাদ সূত্রে আরও জানা গেছে, হত্যাকারী তামান্না কয়েকদিন যাবত মানসিক ভারসাম্যহীন আচরণ করছিলেন। এ হত্যাকান্ড নিয়ে আরও দুটি সংবাদ দেখুন এখানে এবং এখানে।
উপরোক্ত তথ্যপ্রমাণ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে, সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া সংবাদটিতে ব্যবহৃত ছবিটি মূলত অন্য একটি ঘটনার। দুই বছরের পুরনো সংবাদ তারিখ উল্লেখ না করে ভুল ছবি ব্যবহার করে প্রচার করার কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?