সম্প্রতি ফেসবুকে একজন নারীর মরদেহের ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে এটি বাংলাদেশে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা। তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এটি বাংলাদেশের ঘটনা নয়, বরং ভারতের আসাম রাজ্যে একজন নারীর মরদেহ উদ্ধারের ছবি।
আলোচ্য ভিডিও থেকে বিভিন্ন কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চে ‘Konmani Rajbongshi Konmani’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ১০ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখ প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে যুক্ত প্রথম ছবিটি আলোচ্য ছবিটির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
পোস্টে বলা হয়েছে ২৩ বছর বয়সী একজন নারীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে। উদ্ধারস্থল হিসেবে ভারতের আসামের ধেমাজি জেলার গাইনদী রেলওয়ে ব্রিজ-সংলগ্ন এলাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পোস্টে মৃত নারীর সাথে পাওয়া আধার কার্ডে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে – মারকত্ত্বা, দিনাবন কলিতা, শিলআলী মজু গ্রাম, জামুগুৰি পাথলি, ১নং বিষ্ণুপুর, ধেমাজি, আসাম-৭৮৭০৫৭।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘News18 Assam’ থেকে ১০ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতের আসামে ধেমাজির গাইনদী নদীর তীরে এক তরুণীর মরদেহ পাওয়া গেছে। নিহতের নাম জ্যোতিকা কলিতা। পরিবারের ধারণা, কোনো দুষ্কৃতকারী তাকে হত্যা করেছে। জ্যোতিকা ধেমাজি জেলার বিষ্ণুপুরের শিলআলি মাজগাঁও এলাকার বাসিন্দা ছিলেন এবং মেকআপ আর্টিস্ট হওয়ার প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন।
৯ অক্টোবর তিনি বাড়ি থেকে ধেমাজি শহরে গিয়ে একটি পার্লারে প্রশিক্ষণ নেন এবং বিকেল চারটার দিকে সেখান থেকে বের হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন ধেমাজি শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরের গাইনদী রেলওয়ে ব্রিজের পাশে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের গলায় কালচে দাগ দেখা গেছে ও মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল। ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে AS22K2117নম্বরের একটি স্কুটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
‘Konmani Rajbongshi Konmani’-এর ফেসবুক পোস্টে হুবহু এই নম্বরওয়ালা স্কুটির ছবি পাওয়া যায়।
এসব তথ্যের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া যায়, ভারতের একটি মৃতদেহের ছবিকে “বাংলাদেশে ধর্ষণের পর হত্যা” দাবিতে ফেসবুকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এসব পোস্টকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।
Claim: সম্প্রতি ফেসবুকে একজন নারীর মরদেহের ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে এটি বাংলাদেশে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা।
Claimed By: Facebook Users
Rating: False
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh