শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত আরটিভির এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

Published on: March 20, 2024

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত আরটিভির একটি ফটোকার্ড আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে নিচে একটি উক্তি জুড়ে দেয়া হয়েছে যে “বিবেক কাজ করলে নিজেকে এত বড় পাপে জড়াতাম না।” ফটোকার্ডটি দেখে অনেক ব্যবহারকারী এটিকে সত্য ভেবে ধরে নিয়েছেন। তবে, ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান করে দেখেছে শেয়ারকৃত ফটোকার্ডটিতে যে উক্তিটি উদ্ধৃত করা হয়েছে সেটি চট্টগ্রামে একটি হত্যা মামলার আসামি আনার কলি নামক একজন নারীর। আরটিভি গত ০৩ অক্টোবর ২০২৩ এ তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে আনার কলির ছবি এবং উক্তি সংবলিত একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করে। মূলত ঐ ফটোকার্ডটিকে এডিট করে আমাদের আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ফটোকার্ডটিকে “বিকৃত” বলে সাব্যস্ত করছে। 

এমন কয়েকটি পোস্টের নমুনা দেখুন এখানে, এখানে, এবং এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান: 

সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ফটোকার্ডটির যথাযথতা যাচাই করতে আমরা আরটিভির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজটি ঘেঁটে দেখেছি যে তারা আদৌ এমন কোন ফটোকার্ড প্রকাশ করেছিল কিনা। আমাদের অনুসন্ধানে আরটিভির ফেসবুক পেজ থেকে গত ০৩ অক্টোবর ২০২৩ এ প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড পাওয়া গেছে, যেখানে উদ্ধৃত উক্তিটির সাথে ভাইরাল হওয়া ফটোকার্ডের উক্তির মিল রয়েছে। আরটিভি কর্তৃক প্রকাশিত উক্ত ফটোকার্ডটির সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সংবাদ পড়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামে মো. হাসান নামক একজন ব্যক্তিকে হত্যা মামলার আসামি আনার কলি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি দোষী, আমি কি আপনাদের একবারও বলেছি আমি নির্দোষ? তখন আমার আবেগ কাজ করেছে, বিবেক কাজ করেনি। তখন যদি আমার বিবেক কাজ করতো, তাহলে এত বড় পাপে নিজেকে জড়িয়ে পড়তাম না। কারও কথা না ভাবলেও একবার আমার সন্তানের কথা ভাবতাম। আমি আমার সন্তানের কথা পর্যন্ত ভাবিনি।”

তাছাড়া, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ০২ অক্টোবর ২০২৩ এ প্রকাশিত ‘স্বামীর প্রতি ভালবাসার টানে আমার বিবেক কাজ করেনি, আবেগ কাজ করেছে’ | Chattogram News | PBI – শিরোনামের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া গেছে, যেখানে আনার কলি সাংবাদিকদের সাথে তার শ্বশুর মো হাসানকে হত্যার বর্ণনা দিচ্ছিলেন।

অতএব, উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, আমাদের আলোচিত ফটোকার্ডটি আসল নয়। মূলত আরটিভির মূল ফটোকার্ডটিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে প্রধানমন্ত্রীর ছবি বসিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ফটোকার্ডটিকে বিকৃত বলে সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh