অযোধ্যা মসজিদ নির্মাণে ব্রিটিশ ধনকুবেরের ৫০০০ কোটি টাকা অনুদানের খবরটি গুজব

Published on: March 12, 2024

সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্টে দাবি করা হচ্ছে ভারতের অযোধ্যা মসজিদ নির্মাণের জন্য ব্রিটিশ ধনকুবের আসিফ আজিজ পাঁচ হাজার কোটি টাকা দান করেছেন। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, এবং আসিফ আজিজের দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে এ ধরনের অর্থ সহায়তার কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি। এদিকে অপর একটি তথ্যযাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে, অযোধ্যা মসজিদ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা মুসলিম সুন্নি কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ড থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে এ অর্থদানের দাবিটি ভুয়া। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “মিথ্যা” আখ্যা দিচ্ছে।

 গুজবের উৎস

এ বছর জানুয়ারি মাসের শেষের দিক থেকে পোস্টটি ফেসবুকে ছড়াতে থাকে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে , এখানে



ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

২০১৯ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে বিতর্কিত বাবরি মসজিদের জমি মন্দিরের জন্য বরাদ্দ দেয়, যেখানে এ বছর জানুয়ারিতে রামমন্দির উদ্বোধন করা হয়। একই রায়ে বলা হয় অযোধ্যায় মসজিদ নির্মাণের জন্য তাদের পাঁচ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর প্রেক্ষিতে এ বছর মে মাসের দিকে অযোধ্যা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ধান্নিপুর গ্রামে বরাদ্দকৃত স্থানে মসজিদ মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ-এর নির্মাণকাজ শুরু হবার কথা রয়েছে।

আসিফ আজিজ লন্ডনের একজন বিলিওনিয়ার এবং আজিজ ফাউন্ডেশন নামে তার একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অযোধ্যা মসজিদ নির্মাণের জন্য আসিফ আজিজের পক্ষ থেকে অর্থ সহায়তার কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। আজিজ ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট খুঁজে এ মসজিদ তৈরিতে অর্থদান সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি।

 

এদিকে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাবের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, তাদের পক্ষ থেকে অযোধ্যা মসজিদ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা উত্তর প্রদেশের মুসলিম সুন্নি কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দাবিটি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা। তারা এখনও ভারতের বাইরে থেকে অনুদান পাওয়ার উদ্দেশ্যে সরকারি অনুমতির জন্য আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই তাদের পক্ষ থেকে ধনকুবের আসিফ আজিজের কাছে অনুদানের জন্য যোগাযোগ করা হয় নি, যে কারণে আসিফ আজিজের কাছ থেকে মসজিদের জন্য অনুদান পাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।

 

তাই সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।

 

 

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh