Published on: September 9, 2023
![]() |
এমন কিছু পোস্টের নমুনা দেখুন এখানে, এখানে, এবং এখানে।
Image: Example of a viral Facebook post
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:
সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টের দাবিটির সত্যতা যাচাই করতে আমরা উক্ত পোস্টে উল্লিখিত নামগুলো যথাক্রমে বাংলা এবং ইংরেজিতে লিখে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে গুগল সার্চ করি। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই গুগল সার্চের ফলাফলে উক্ত নামগুলোর বিপরীতে এ ধরনের বিশেষণের কোনো নমুনা পাওয়া যায় নি। যেমন: তারেক জিয়া, জিয়াউর রহমান কিংবা খালেদা জিয়া’র নাম বাংলা এবং ইংরেজিতে লিখে সার্চ করার পর ফলাফল হিসেবে তাদের নামে তৈরি উইকিপিডিয়া পেইজ, তাদের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, এবং অসংখ্য ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। তাছাড়া, সার্চের ফলাফলে তারেক রহমানকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ভাইস চেয়ারম্যান, জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি, এবং খালেদা জিয়াকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে প্রদত্ত কয়েকটি স্ক্রিনশটে তাদের নামের বিপরীতে প্রাপ্ত গুগল সার্চের ফলাফল দেখুন:
Image: Google search result for Ziaur Rahman
Image: Google search result for Tarique Rahman
Image: Google search result for Khaleda Zia
তাছাড়া, গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে কোন কিছু সার্চ করা হলে প্রত্যেক ফলাফলের সাথে এটা জানিয়ে দেওয়া হয় যে একটি নির্দিষ্ট সার্চের বিপরীতে কতগুলো ফলাফল পাওয়া গেছে এবং ফলাফলগুলো বের করতে সার্চ ইঞ্জিনের কত সময় লেগেছে। যেমন: তারেক জিয়া এর নাম ব্যবহার করে সার্চ করার পর গুগলে সাত লাখ ২২ হাজার ফলাফল পাওয়া গেছে অর্থাৎ, গুগল তারেক জিয়া সম্পর্কে পুরো ইন্টারনেট সেচে সাত লাখ ২২ হাজার ফলাফল প্রদান করতে সমর্থ হয়েছে। একইভাবে, খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে গুগল ৩২ লাখ ষাট হাজার ফলাফল প্রদান করেছে। অন্যদিকে, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টের সাথে সংবলিত ছবিগুলোতে দেখা গেছে যে, তারেক জিয়া, জিয়াউর রহমান, কিংবা খালেদা জিয়া, প্রত্যেকের ক্ষেত্রে গুগল ৯৫ কোটি ৪০ লাখ ফলাফল প্রদান করেছে যার সাথে আমাদের তাৎক্ষনিক সার্চে প্রাপ্ত ফলাফলের সংখ্যার আকাশ-পাতাল তফাত রয়েছে। তাছাড়া, প্রত্যেক সার্চের ক্ষেত্রে একই সংখ্যক ফলাফল প্রদান করা প্রায় অসম্ভব। সুতরাং, এটা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ছবিগুলো এডিট করা হয়েছে।
মূলত, একজন ব্যক্তি যখন গুগল ব্যবহার করে ইন্টারনেটে কোন কিছু খুঁজতে যান এবং সার্চ ইঞ্জিনকে ঠিকমতো বুঝাতে পারেন না তিনি কি খুঁজছিলেন তখন সার্চ ইঞ্জিন ঐ ব্যক্তির চাহিদামতো তাকে বেশকিছু সাজেশন দিয়ে জানতে চায় যে তিনি এটা খুঁজছিলেন নাকি বা এটা বুঝিয়েছিলেন কিনা। সহজ করে বললে, কোন কিছু খুঁজতে গিয়ে ঐ জিনিসের নাম ভুল লিখলে, বানান ভুল করলে বা এমন কিছু লিখলে যা সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারে না, তখন সার্চ ইঞ্জিন তার কাছাকাছি জিনিসগুলোর নাম বের করে এনে জানতে চায় যে এই নির্দিষ্ট জিনিসটিই খোঁজা হচ্ছিলো কিনা। এসকল ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন একজন ব্যবহারকারীর কাঙ্খিত জিনিসের কাছাকাছি এমন একটি সাজেশন দেয় যা এর আগে বহুবার ঐ সার্চ ইঞ্জিনে খোঁজা হয়েছিলো। অতএব, এটা প্রায় অসম্ভব যে, তারেক জিয়া, জিয়াউর রহমান, বা বিএনপি লিখে সার্চ করলে ফলাফল হিসেবে খাম্বা তারেক, এতিমের টাকা চোর, কিংবা বাংলাদেশ নাশকতা পার্টি প্রভৃতি প্রদর্শন করবে।
উপরের আলোচনা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টের সাথে যে ছবিগুলো যুক্ত করা হয়েছে সেগুলো এডিট করে তৈরি করা এবং বাস্তবেও তারেক জিয়া কিংবা খালেদা জিয়ার নামের বিপরীতে প্রাপ্ত গুগল সার্চের ফলাফলে কোন বিশেষণ পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টের দাবিটিকে “বিকৃত” বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
|