অটোমান সুলতানের বর্মকে নবীজির যুদ্ধের পোষাক বলে প্রচার

Published on: November 11, 2023

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি সুসজ্জিত বর্মের (Armor) ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, এটি নবীজি মুহাম্মদ (সা:) এর যুদ্ধের পোষাক মোবারক। তবে, উক্ত বর্মের ভিডিওটির উৎস অনুসন্ধান করে জানা গেছে, সেটা ১৭ শতকের অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান তৃতীয় মুস্তফা এর একটি বর্ম যা বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে তিনি পরিধান করতেন। বর্তমানে বর্মটি তুরস্কের ইস্তানবুল শহরে অবস্থিত টোপকাপি প্রাসাদ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে। 

এমন কয়েকটি পোস্টের নমুনা দেখুন এখানে, এখানে, এবং এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত বর্মের ভিডিওটি থেকে কিছু স্ক্রিনশট নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধান করে বিভিন্ন উৎস থেকে হুবহু একই রকমের একটি বর্মের সন্ধান পাওয়া গেছে। শেয়ারকৃত ভিডিওটিতে দৃশ্যমান বর্মটিকে নবীজি মুহাম্মদ (সা:) এর যুদ্ধের পোশাক বলে দাবি করা হলেও বিভিন্ন উৎস মারফত জানা গেছে যে, সেটা সতেরো শতকের অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান তৃতীয় মুস্তফার  বর্ম। All that is interesting (ati) নামক একটি ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তালিকাতে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওতে দৃশ্যমান বর্মের মতো অনুরূপ আরেকটি বর্ম দেখতে পাওয়া গেছে। যার বিস্তারিত বর্ণনায় লেখা আছে সেটা অটোমান সুলতান তৃতীয় মুস্তফা এর বর্ম। বর্তমানে বর্মটি তুরস্কের ইস্তানবুলের টোপকাপি প্রাসাদ জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য সংগৃহীত আছে।

Alamy এবং Reddit নামক দুটো ওয়েবসাইট থেকে অটোমান সুলতান তৃতীয় মুস্তফা এর সুসজ্জিত বর্মের যে ছবিগুলো পাওয়া গেছে তার সাথে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটিতে দৃশ্যমান বর্মটির হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও, Daily Motion নামক একটি ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত ভিডিওতে টোপকাপি প্রাসাদ জাদুঘরে সংগৃহীত অটোমান অস্ত্রশস্ত্র এবং বর্মের মাঝে সুলতান তৃতীয় মুস্তফা এর বর্মটি লক্ষ্য করা গেছে।

অতএব, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটিতে যে বর্মকে নবীজি মুহাম্মদ (সা:) এর যুদ্ধের পোশাক বলে দাবি করা হয়েছিলো সেটা আসলে সতেরো শতকের একজন অটোমান সুলতানের ব্যবহৃত বর্ম।

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ শেয়ারকৃত ভিডিওগুলোর দাবিকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে। 

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh