Published on: March 9, 2022
সম্প্রতি “ইউক্রেনের সেনাঘাটিতে রাশিয়ার ভয়ংকর বিমান হামলা! উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে শক্তিশালী যুদ্ধ ট্যাংকার গাড়ি” এমন শিরোনামে ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কোনো ভিডিও নয়। বরং ২০১৮ সালে নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত সামরিক প্রশিক্ষণের ভিডিও। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ভিডিওটিকে “মিথ্যা” চিহ্নিত করছে। |
এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
৭ মিনিট ১১ সেকেন্ড দীর্ঘ এই ভিডিওতে কিছু সামরিক হেলিকপ্টার দিয়ে গাড়ি আকাশে তুলে নিতে দেখা যায়। আবার সেখানে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণও চোখে পড়ে এবং দাবি করা হয়, ইউক্রেনের বিমান ঘাঁটিতে রাশিয়া আক্রমণ করে ট্যাংক উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান
ভাইরাল এই ভিডিও থেকে স্থিরচিত্র সংগ্রহ করে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে, “Heavy Delivery CH-47 Chinooks Sling Load Training” ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান ডেইলি মোশন এর একটি ভিডিও সামনে আসে।
এই ভিডিওর সাথে বর্তমানে ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় শতভাগ মিলে যাচ্ছে।
ডেইলি মেইল এর প্রতিবেদনে ভিডিওটি সম্পর্কে বলা হয়,এটি২০১৮ সালে নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত একটি সামরিক প্রশিক্ষণের ভিডিও। এই প্রশিক্ষণটির নাম “দ্য ফ্যালকন অটাম”, নেদারল্যান্ডসের অন্যতম বৃহৎ সম্মিলিত প্রশিক্ষণ এটি। যেখানে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ থেকে ১৩ অক্টোবর ২০১৮ পর্যন্ত অন্যান্য দেশের সাথে নেদারল্যান্ডসের সামরিক বাহিনী অংশগ্রহণ করে। মূল ভিডিওটি এই সময়কালেই ধারণ করা হয়েছে।
ভিডিওতে গাড়ি তুলে নিয়ে যেতে যে হেলিকপ্টারটিকে দেখা যাচ্ছে এর নাম বোয়িং সি এইচ-৪৭। এই হেলিকপ্টারটি আমেরিকার একটি কোম্পানি তৈরি করেছে এবং ভারী জিনিসপত্র তুলে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এটির।
এছাড়াও ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ তারিখে “টিয়েনফং” নামে ভিয়েতনামের একটি দৈনিকেও এই একই ভিডিওর একটি খন্ডচিত্র দেখা যায়। সেখানে এই সিএইচ-৪৭ চিনক হেলিকপ্টারটিকে “মন্সটার ইন দ্য এয়ার” আখ্যা দিয়ে দাবি করা হয় এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় যানবাহন বহনকারী বিমান।
এছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের সর্বশেষ বিস্তারিত দেখতে সিএনএন এর একটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে।
সুতরাং, পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় বরং ২০১৮ সালের। এটি ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যকার সংকটের সাথে কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট নয়। মূলত নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত একটি সামরিক প্রশিক্ষণের বা মহড়ার ভিডিও এটি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ সংগত কারণেই এটিকে “মিথ্যা” চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান। |