“পুলিশের নির্দেশে ট্রেনে আগুন দিয়েছে টিটি” – বিভ্রান্তিকর দাবি

Published on: December 24, 2023

যা দাবি করা হচ্ছে: “পুলিশের নির্দেশে ট্রেনে আগুন দিয়েছে টিটি বেরিয়ে এলো সেনাবাহিনীর অভিযানে”- এমন শিরোনাম সংবলিত একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হতে দেখা যায়। 

ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত: দাবিটি বিভ্রান্তিকর। পুলিশের নির্দেশে ট্রেনে আগুন দিয়েছে টিটি (ট্রেনের কর্মকর্তা) এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে সেনাবাহিনীর অভিযানে, এই দাবি করেছেন একজন প্রত্যক্ষদর্শীতথ্যটি পাওয়া যাচ্ছে ডেইলি স্টারের একটি ভিডিও প্রতিবেদনেএর পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত কোথাও পাওয়া যায় নিতাছাড়া সেনাবাহিনির অভিযান বিষয়ে যে দাবি করা হয়েছে, মূলধারার সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেও এ ধরনের তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি।

গুজবের উৎস:

ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওগুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

ভাইরাল ভিডিওটির সত্যতা ও যর্থাথতা যাচাইয়ে ফ্যাক্টওয়াচ টিম অনুসন্ধান শুরু করে। শেয়ারকৃত ভিডিওটির উল্লেখিত দাবির সত্যতা যাচাই করতে কিছু প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। সেখানে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, “The Daily Star” এর একটি লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এর সূত্র ধরে ইউটিউবে অনুসন্ধান করা হলে, গত ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ এ দ্য ডেইলি স্টার প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। “প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে ট্রেনে আগুনের ঘটনা”- শিরোনামে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি মূলত তেজগাঁওয়ে একটি ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিওতে যে ব্যক্তির বক্তব্যটি ব্যবহার করা হয়েছে তিনি মূলত সেই ট্রেনের একজন যাত্রী। তিনি ট্রেনের আগুন লাগানোর ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি তার বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, যারা ট্রেনটিতে আগুন লাগিয়েছে তারা ট্রেনের গার্ড  হতে পারে। কেননা, ট্রেনটিতে আগুন লাগার পূর্বে তিনি ট্রেনের গার্ডের পোশাক পরিহিত দুইজন ব্যাক্তিকে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে এবং নিজেদের মধ্যে কথা বলতে দেখেন। 

উল্লেখ্য, ভিডিওটিতে সেনাবাহিনীর অভিযানের যে দাবিটি করা হয়েছে, সেটিরও কোনো সুনির্দিষ্ট ও নির্ভরযোগ্য উৎসের কথা উল্লেখ করা হয় নি। তবে, মূলধারার গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেনাবাহিনীকে নয়, এ ঘটনার প্রাথমিক অনুসন্ধানের দায়িত্ব পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) এবং গোয়েন্দা বাহিনীকে দেয়া হয়েছে। 

এই ঘটনাগুলো এখনো তদন্তাধীন রয়েছে তাই নিশ্চিতভাবে বলার কোনো সুযোগ নেই যে ঠিক কে বা কারা আগুন দিয়েছে। এছাড়া মূল ভিডিওতে পুলিশের নির্দেশ ছিলো কি না তারও কোনো তথ্য দেখতে পাওয়া যায় নি, এবং এই ঘটনা নিয়ে সেনাবাহিনীর তদন্ত করার কোনো প্রমাণও খুঁজে পাওয়া যায় নি।

অর্থাৎ, ভাইরাল ভিডিওর দাবিটি প্রমাণিত কোনো সত্য নয় বরং একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য। এই বক্তব্য এবং ভাইরাল এই দাবির মধ্যেও রয়েছে যথেষ্ট অসংগতি।

তাই সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল দাবিটিকে “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh