দাফনের জায়গা না পেয়ে বন্যার পানিতে লাশ ভাসিয়ে দেয়ার ভূয়া দাবি বিকৃত ছবি

Published on: August 13, 2023

সম্প্রতি ফেসবুকে বন্যাপ্লাবিত এলাকায় একটি লাশ ভেসে আসার ছবি ভাইরাল হতে দেখা।  এই ছবির ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে এটি এমন এক মায়ের লাশের ছবি যাকে চট্রগ্রামে বন্যার ফলে দাফন করার জন্য কোনো শুকনো জায়গা না পেয়ে  বন্যার পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে । ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটা ২০২২ সালে সিলেটের বন্যার সময়কার ছবি, সম্প্রতি চট্টগ্রামে বন্যার না। তাছাড়া বন্যার পানিতে ভেসে থাকা যে লাশটি দেখা যাচ্ছে, সেটি এডিট করে মূল ছবিতে বসানো হয়েছে। বাস্তবে চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে লাশ ভাসিয়ে দেয়ার মত কোনো ঘটনার উল্লেখ মূলধারার সংবাদমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো উৎস থেকে পাওয়া যায়নি। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে “বিকৃত” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

 ফেসবুকে ভাইরাল এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান: 

ভাইরাল হওয়া ছবিটি ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ঢাকা পোস্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৯ জুন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ফেসবুকে শেয়ার হওয়া ছবিটির পূর্ব সংস্করণের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি ছিল সিলেটে তৎকালীন বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি সম্পর্কিত। 

ছবি দুটি মনোযোগ দিয়ে দেখলে অনেকগুলো মিল খুঁজে পাওয়া যাবে।

দেখা যাচ্ছে যে, মূল ছবিতে সাদা কাপড় মোড়ানো একটি লাশের ছবি জুড়ে দিয়ে ভাইরাল হওয়া ছবিটি বানানো হয়েছে।  

২০২২ সালের মে মাসে ভারতের আসাম ও অরুণাচল প্রদেশে অধিক পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছিল। তার ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে সুরমা, কুশিয়ারা সহ অনান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল। ভাইরাল ছবিটির ছবিটির পূর্ব সংস্করণের ছবিটি মূলত সেই সময়কার। 

অন্যদিকে বিভিন্ন ভাবে ভিন্ন ভিন্ন  কিছু কী-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করেও চট্রগ্রামের বন্যার সময় কোনো লাশকে দাফন করার জন্য শুকনো জায়গা না পেয়ে বন্যার পানিতে ভাসিয়ে দেয়ার মত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া গত ৭ থেকে ৯ আগস্ট তিন দিন অতি ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া এবং লোহাগাড়ার কিছু অংশ বন্যায় তলিয়ে যায়। ভাইরাল হওয়া ছবিটি যেহেতু এক বছর আগেও খুঁজে পাওয়া গেছে সুতরাং এটা চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক বন্যার কোনো ছবি নয় নিশ্চিতভাবেই। 

সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে “বিকৃত” সাব্যস্ত করছে।

 

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh