খালেদা জিয়ার জামিন ও বিদেশে চিকিৎসার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে?

Published on: October 4, 2023

যা দাবি করা হচ্ছে: “সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। বিদেশে চিকিৎসা নিতে আর কোনো বাঁধা নেই”।  

ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত: বাংলাদেশে বিরোধী দল বিএনপি-র চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে স্থায়ী মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেয়ার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। তবে সেই বিষয়ে নেতিবাচক মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এটাও বলেছেন যে, আইন অনুযায়ী অনুমতি দেওয়ার সুযোগ সরকারের হাতে নেই। যার ফলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারছেন না মিসেস খালেদা জিয়া। সংগত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এসব দাবিগুলোকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।

 

ফেসবুকে ভাইরাল এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

 

 ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আদালতের রায়ে সাজা ভোগ করছেন। সে সাজা স্থগিত হয়েছে কিনা বা নতুন কোনো রায় হলো কিনা তা জানতে বিভিন্ন কী-ওয়ার্ড ধরে গুগলে অনুসন্ধান করা হয়। যদিও সেখান থেকে নতুন কিছু পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে খালেদা জিয়া কারাগারে গিয়েছিলেন। ২৫ মাস কারাভোগের পরে তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন। মূলত দেশে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পরে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে। সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার ক্ষমতাবলে শর্তযুক্তভাবে সাজা স্থগিত করে তাকে মুক্তি দিয়েছে। শর্তগুলো হলো, “এই সময়ে খালেদা জিয়া ঢাকায় নিজের বাসায় অবস্থান করতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না”। আরও বিস্তারিত দেখুন এখানে।  এরপরে থেকে তিনি বাসায় অবস্থান করছেন এবং দেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

তবে খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে গত ৯ আগস্ট থেকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎিসাধীন আছেন। তিনি বর্তমানে লিভার সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন। এরই মধ্যে মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার যেসব জটিলতা রয়েছে তার চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। তাকে বিদেশে লিভার ট্রান্সপ্লান্টের সুবিধা সম্বলিত আধুনিক মাল্টিপারপাস অ্যাডভান্স সেন্টারে দ্রুত পাঠানো জরুরি। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানুন এখানে। তাছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য আন্দোলন করে আসছে।

তবে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা দেয়ার সুযোগ দেয়ার জন্য অনুমতি চেয়ে তার পরিবারের পক্ষে তার ভাই শামিম ইস্কান্দার সেপ্টেম্বর ২৫ তারিখে সরকারের কাছে একটি আবেদন করেছিল। সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইনি যাচাই বাছাইয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিলো। কিন্তু বিএনপির চেয়ারপারসনকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়ার সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি আইন মন্ত্রণালয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আইন অনুযায়ী অনুমতি দেয়ার সুযোগ সরকারের হাতে নেই।

আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে পুরো ব্যাখ্যায় যা বলেছেন তা জানতে পড়ুন এখানে

বিএনপি ইতোমধ্যেই আইন মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় যে খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন গৃহিত হয় নি।

উপরোক্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ফ্যাক্টওয়াচ এই দাবিকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh