হোলি উৎসবে বিশ্ব জুড়ে ৪৮ হাজার মেয়ে ধর্ষণের শিকার?

Published on: April 19, 2024

সম্প্রতি বিবিসি বাংলা সদৃশ একটি সংবাদের স্ক্রিনশটের ছবি পোস্ট করে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিবিসি বাংলার উক্ত ছবিটিতে লেখা আছেহিন্দু র্মাবলম্বীদের অন্যতম হোলি উৎসবে বিশ্ব জুড়ে ৪৮ হাজার মেয়ে ধর্ষণের শিকার ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করে বিভিন্ন ধরণের সাম্প্রদায়িক উগ্র মন্তব্য করা হচ্ছে। 

তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে বিবিসি বাংলাহিন্দু ধর্ম অবলম্বীদের অন্যতম হোলি উৎসবে বিশ্ব জুড়ে ৪৮ হাজার মেয়ে ধর্ষণের শিকারশিরোনামে এমন কোন সংবাদ প্রকাশ করেনি। কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন সকল পোস্টকেমিথ্যাসাব্যস্ত করছে। 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি নমুনা পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানঃ

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ফ্যাক্টওয়াচের গুগল কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান শুরু করে। তবে অনুসন্ধানে ‘হিন্দু ধর্ম অবলম্বীদের অন্যতম হোলি উৎসবে বিশ্ব জুড়ে ৪৮ হাজার মেয়ে ধর্ষণের শিকার’ শিরোনামে বিবিসি বাংলার কোন সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

 

লক্ষ্য করলে দেখা যাবে বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটের ফন্টের কোন মিল নেই।

বিবিসি নিউজ বাংলার ফেসবুক পেজেও এমন কোনো খবর দেখা যাচ্ছে না। এছাড়া অন্য কোনো গনমাধ্যমেও এমন ধর্ষণের খবর পাওয়া যায়নি।

ভারতভিত্তিক এনজিও সিটিজেনস ফর জাস্টিস এ্যান্ড পিস এর ওয়েবসাইটের এই নিবন্ধ থেকে জানা যাচ্ছে, দিল্লী পুলিশ হোলির সময়ে প্রতিদিন ২১টি ধর্ষণের মামলা গ্রহণ করে, যা অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি। ভারতের অন্যান্য স্থানেও একই অপরাধ প্রবণতা দেখা যায় বলে এই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। তবে এখানে ৪৮ হাজার, কিংবা নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।

ফ্যাক্টচেকিং ওয়েবসাইট রিউমার স্ক্যানারও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোর সত্যতা অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের প্রতিবেদনেও পোস্টগুলোর স্ক্রিনশটকে ভুয়া বলা হচ্ছে। রিউমার স্ক্যানার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিবিসি বাংলার সাংবাদিক শাহনেওয়াজ রকি জানিয়েছেন ‘বানান দেখেই বুঝা যাচ্ছে এটা বিবিসির নিউজ না।’

সার্বিক দিক বিবেচনা করে দেখা যাচ্ছে বিবিসি বাংলা ‘হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম হোলি উৎসবে বিশ্ব জুড়ে ৪৮ হাজার মেয়ে ধর্ষণের শিকার’ শিরোনামে কোন সংবাদ প্রচার করেনি। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটের ছবিটি ডিজিটাল এডিটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোকে ‘’মিথ্যা” হিসেবে শনাক্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh