যুক্তরাষ্ট্রের  স্যাংশন তালিকায় বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম রয়েছে?

Published on: June 17, 2023

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে খবর ছড়িয়েছে যে, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন তালিকায় আছেন। ফ্যাক্টওয়াচ এর অনুসন্ধানে দেখা যায় এই তথ্যটি পুরোপুরি মিথ্যা।  বিভ্রান্তিকর তথ্যটি নিয়ে আরো অনুসন্ধান করলে দেখা যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের অফিসিয়াল সাইটের Sanction Programs and Information সেকশনে  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এর অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কোন তথ্য নেই। কোন তথ্য সূত্র  ছাড়াই সামাজিক মাধ্যমগুলোতে এই গুজবগুলো শেয়ার করা হচ্ছে। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এই পোস্টগুলোকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।

ভাইরাল পোষ্টগুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্ট ওয়াচ এর অনুসন্ধান: 

দাবিটির সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক বা দেশীয় কোন গণমাধ্যমেই বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল  এর যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি।

গত ৩১ মে ২০২৩ এ দৈনিক বনিক বার্তায় “মার্কিন ভিসা নীতির প্রতিক্রিয়া জানতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পিটার হাসের সাক্ষাৎকার” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশীদের জন্য মার্কিন সরকার ঘোষিত ভিসা নীতির প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চান দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সেই প্রতিক্রিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসা নীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশ এর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই প্রতিবেদনে আসাদুজ্জামান খান কামালকে যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন তালিকায় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কোনো তথ্য নেই।

যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক কোন দেশের সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে সেই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে অ্যান্থনি ব্লিনকেন টুইট প্রকাশ করে থাকেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির ফেসবুক পেইজ বা বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের টুইটার অ্যাকাউন্ট খুঁজে এমন কোনো তথ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

 

যুক্তরাষ্ট্রের  ভিসা নীতি ঘোষণার পর বাংলাদেশের মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল আই এর টকশো অনুষ্ঠান তৃতীয় মাত্রায় লাইভে যুক্ত হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থাপক জিল্লুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড লু বলেন, “আমি একটি বিষয় খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, আজ আমরা কাউকে স্যাংশন দিচ্ছি না। সেক্রেটারি অব স্টেট একটি নতুন নীতির ঘোষণা করেছেন, যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সেই সব ব্যক্তির ভিসা সুবিধায় বিধি–নিষেধ আরোপ করতে পারবে, যারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত করবে।” অর্থাৎ এই সাক্ষাৎকারেও মার্কিন প্রতিনিধি কারো নাম উচ্চারণ করেন নি। ফলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন তালিকায় থাকার দাবিটির কোনো তথ্যসূত্র পাওয়া যাচ্ছে না ।

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টগুলোর দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh