ভারতীয় কাঁচা পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেনি কাতার

Published on: April 27, 2024

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, কাতার পেঁয়াজ-সহ ভারতীয় কিছু কাঁচা পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে কোনো প্রকার তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই এমন দাবি করা হয়েছে। অপরদিকে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য-প্রমাণ থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতই পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। তাছাড়া নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করার পরেও কিছু দেশে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি করেছে। এছাড়া কাতার ভারতীয় পেঁয়াজ-সহ কিছু কাঁচা পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা দিলে তা ভারতীয় বা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে তা আসার কথা। অথচ এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে কোনো তথ্য নেই।

এমন কিছু পোস্টের নমুনা দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

 

বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড ধরে গুগলে সার্চ করা করা। সেখান থেকে জানা যায়, ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির উপরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। যার মেয়ার ছিল ৩১ মার্চ ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত। যদিও মার্চ মাসে নতুন ঘোষণা দিয়ে ভারত জানায়, পেঁয়াজ রপ্তানির উপরে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন bdnews24.com এবং প্রথম আলো থেকে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনে। প্রতিবেদন দুটি দেখুন এখানে এবং এখানে

উল্লেখ্য, পেঁয়াজ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বিশ্বে ভারতের শক্ত অবস্থান রয়েছে। বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, নেপাল এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের দেশের বাজারে পেঁয়াজের চাহিদার ঘটাতি পূরণ করতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে থাকে। তাই এসকল দেশ যদি কোনো কারণে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে তা নিয়ে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হবার কথা। কেননা ভারত যখন পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছিল, বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে, বাংলাদেশী এবং ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি থেকে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অথচ “কাতার ভারতীয় পেঁয়াজ-সহ কিছু কাঁচা পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে” এ জাতীয় কোনো খবর ভারতীয় বা কাতারভিত্তিক কোনো সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।

অপরদিকে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, কোনো দেশের সরকার যদি পেয়াজ আমদানি করতে ভারতকে অনুরোধ করে তাহলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানির সুযোগ দেবার অধিকার রাখবে। এই বিষয় নিয়ে বিবিসি থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, “ভারতে বেশ কিছুদিন ধরেই পেঁয়াজ রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটানের মতো কয়েকটি দেশে এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই পেঁয়াজ পাঠানো হচ্ছে”।

 

বলাবাহুল্য, কাতার সরকারের বাণিজ্য এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত তথ্যের বিষয়ে খোঁজ করা হয়। তবে ভারত থেকে পেঁয়াজ বা অন্য কোনো পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া জাতীয় কোনো তথ্যই উক্ত  ওয়েবসাইটে নেই। ওয়েবসাইটটিতে আমদানি পণ্যের মূল্য  তালিকা দেয়া রয়েছে। যেখানে ভারত থেকে আমদানিকৃত একাধিক পণ্যের নাম রয়েছে। উক্ত  তালিকায় ভারতীয় লাল পেঁয়াজের নাম উল্লেখ রয়েছে। মূল্য তালিকাটি ৪ এপ্রিল এবং  ১৮ এপ্রিল  হালনাগাদ করা হয়েছে। সেখানেও ভারতীয় এই পেঁয়াজের বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

তাই “কাতার ভারতীয় পেঁয়াজ-সহ কিছু কাঁচা পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে” এমন দাবিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” চিহ্নিত করেছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh