প্রাচীরের ছিদ্র দিয়ে গাজায় রুটি পৌঁছে দেয়ার দৃশ্যটি পুরোনো প্রামাণ্যচিত্র থেকে নেয়া

Published on: December 28, 2023

সাম্প্রতিক ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষিতে মিশরের এক যুবক মিশর-গাজা সীমান্ত প্রাচীর ছিদ্র করে গাজাবাসীর জন্য রুটি পৌঁছে দিচ্ছে – এমন দাবিতে সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এ রুটি সরবরাহ করার দৃশ্যটি ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত “Infiltrators” নামক একটি প্রামাণ্যচিত্র থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে মিশর থেকে গাজায় নয়, বরং জেরুজালেম থেকে প্রাচীরের ছিদ্র দিয়ে পশ্চিম তীরে রুটি পাচারের বিষয়টি দেখানো হয়েছিলো। তাই মিথ্যা ক্যাপশনের জন্য ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “বিভ্রান্তিকর” আখ্যা দিচ্ছে।

বিভ্রান্তির উৎস:

এ বছর ২২ ডিসেম্বর থেকে ফেসবুকে উক্ত দাবিতে ভিডিওটি ভাইরাল হতে থাকে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

 

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান:

ভাইরাল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশের ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে একই ভিডিও সম্বলিত আরবি ভাষায় ২০১৫ সালের একটি ফেসবুক পোস্ট পাওয়া যাচ্ছে। যে পেইজটি থেকে পোস্টটি করা হয়েছে সেটি জর্ডানের পত্রিকা ‘Alghad Newspaper’-এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ। এর অনূদিত ক্যাপশন বলছে, এটি ফিলিস্তিনি পরিচালক খালেদ জারারএর “Infiltrators” নামক একটি ডকুমেন্টারির দৃশ্য, যেখানে জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের (West bank) মধ্যকার প্রাচীরের ছিদ্র দিয়ে জেরুজালেম থেকে পশ্চিম তীরে রুটি পাচারের বিষয়টি দেখানো হয়েছে। 

উল্লেখ্য, ইজরায়েলের দখলকৃত এই পশ্চিম তীর বহুদিন ধরে ইজরায়েল ও ফিলিস্তিনের বিবাদের অংশ। 

এদিকে আরব একটি ফ্যাক্টচেকিং সংস্থার ২২ ডিসেম্বরের রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ইংরেজি ভাষাতেও হুবহু একই দাবিতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তাদের রিপোর্ট বলছে, ভিডিওর এ অংশটি ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত খালেদ জারার পরিচালিত “Infiltrators” নামক একটি ডকুমেন্টারি ফিল্মের দৃশ্য। জেরুজালেমের সাথে বিভেদ প্রাচীরের কারণে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের ওপর ভিত্তি করে এ ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছিলো। 

পরবর্তীতে অনলাইনে এ ডকুমেন্টারির ব্যাপারে সন্ধান করে জানা যাচ্ছে, ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ ডকুমেন্টারি সেবছর বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছিলো এবং একাধিক পুরস্কার পেয়েছিলো। 

সর্বোপরি দেখা যাচ্ছে, অনলাইনে ২০১৫ সাল থেকেই উক্ত ভিডিওর অস্তিত্ব রয়েছে। তাই এটি কোনোক্রমেই ২০২৩ সালের ইজরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের সময়কার ঘটনা হওয়া সম্ভব নয়। তাই সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে ‘বিভ্রান্তিকর’ সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh