মিথিলা এবং সৃজিতের সংসার বিচ্ছেদের গুজব

Published on: May 24, 2022

মিথিলা এবং সৃজিতের সংসার বিচ্ছেদ হতে যাচ্ছে- এমন দাবিতে সম্প্রতি একটি খবর ফেসবুকে ভাইরাল হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি মিথ্যা। ভাইরাল খবরের বিস্তারিত অংশের দাবিটি ২০২০ সালের ভিন্ন একটি প্রতিবেদন থেকে হুবহু নকল করা হয়েছে। শুধুমাত্র শিরোনাম বদলে এমন একটি দাবি প্রকাশিত হচ্ছে। এছাড়া মিথিলা-সৃজিত কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম থেকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

ওয়েবপোর্টালের আর্কাইভ লিঙ্কগুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

 

এই খবরের শিরোনামে বলা হচ্ছে, মিথিলা এবং সৃজিতের সংসার ভাঙতে বসেছে। বিস্তারিত খবরটি তুলে ধরা হলোঃ

“সৃজিত মুখার্জি। কলকাতার প্রতিভাবান একজন পরিচালক হিসেবেই সুনাম তার। তবে নির্মাতার বাইরেও টালিউড পাড়ায় তার আরও একটা পরিচয় রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রির মানুষ তাকে প্রেমিকহিসেবেই চিনেন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে সৃজিতের একাধিক প্রেমের খবর প্রকাশ হয়েছে গণমাধ্যমে। ৪২ বছর বয়সি সৃজিত বিয়েও করেছিলেন। কিন্তু সে সংসার বেশিদিন টেকেনি। অনেক ঘাট ঘুরে সৃজিতের প্রেমের তরী অবশেষে ভিড়েছে তীরে। সর্বশেষ বাংলাদেশের অভিনেত্রী মিথিলার সঙ্গে প্রেমে জড়ান সৃজিত।

গেল ৬ ডিসেম্বর বিয়ে করেন তারা। মিথিলাকে বিয়ের আগে বেশ কয়েকজন নারীর নামের সঙ্গে জড়িয়েছে সৃজিতের নাম।

স্বস্তিকার সঙ্গে সৃজিত২০১৩ সালে মিসর রহস্যও ২০১৪ সালে জাতিস্মরসিনেমা নির্মাণ করেন সৃজিত। টলিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি অভিনয় করেন ওই ছবিতে।

এই সিনেমা করতে গিয়েই স্বস্তিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন সৃজিত। তার আগে তখন পরমব্রত চ্যাটার্জির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের বিচ্ছেদ হয় স্বস্তিকার। এমন বিরহের দিনে প্রেমের পেয়ালা হাতে স্বস্তিকার পানে এগিয়ে যান সৃজিত মুখার্জি। তবে স্বস্তিকায় স্বস্তিমেলেনি সৃজিতের। বাধ্য হয়ে দুজন দুই পথ ধরেন।

জয়া আহসানের সঙ্গেওবাংলাদেশের শোবিজের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। হুট করেই কলকাতায় ছবিতে অভিনয় শুরু করেন। ২০১৫ সালে কলকাতার রাজকাহিনিছবিতে অভিনয় করেন জয়া। এ ছবির নির্মাতা সৃজিত। ছবিটি করতে গিয়েই জয়ার সঙ্গে সৃজিতের প্রেমের গুঞ্জন ওঠে।

তবে বিষয়টি নিয়ে প্রথমে নীরব থাকলেও পরে গুঞ্জন নাকচ করে দেন জয়া।বধুমন্তী বাগচীতে ডুবে ছিলেন সৃজিতগত বছরের শুরুতে টাইমস অব ইন্ডিয়াভারতের সংগীতশিল্পী মধুবন্তী বাগচীর সঙ্গে সৃজিতের প্রেমের খবর প্রকাশ করে। তাদের প্রেম নিয়ে মিডিয়া বেশ কিছুদিন সরব থাকলেও হুট করে নীরব হয়ে যায়। মধুবন্তী বাগচীও পরে বিষয়টি অস্বীকার করেন।

সায়ন্তনীর সঙ্গেও প্রেম টেকেনিসৃজিত মুখার্জি পরিচালিত এক যে ছিল রাজাসিনেমায় অভিনয় করেন অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহ ঠাকুর। চলতি বছরের মাঝামাঝি শোনা যায়, এই পরিচালকের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়েছেন সায়ন্তনী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এই জুটির একটি ছবিকে কেন্দ্র করে আলোচনা জমে ওঠে।

যদিও সর্বশেষ তা গুঞ্জন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে।পায়েলের প্রেমে মজেছিলেন সৃজিতযেনো প্রেম কুমারসৃজিত। টালিউড অভিনেত্রী পায়েল সরকারের সঙ্গেও প্রেমে মজে ছিলেন এ নির্মাতা। কিন্তু শেষপর্যন্ত পায়েলেও থাকেনি। একটা পর্যায়ে সম্পর্কের বিচ্ছেদ হয় তাদের মধ্যে।

রিতাভারির সঙ্গেও প্রেমকলকাতার অভিনেত্রী ও মডেল রিতাভারি। সৃজিতের সঙ্গে রিতাভরির প্রেম টালিউড পাড়ায় বেশ আলোচনায় ছিল। তাদের অনেক ঘনিষ্ঠতার খবরও কলকাতার গণমাধ্যমে উঠে আসে। তবে সম্পর্কে পরিণয় আসেনি। হুট করেই দুজনের সম্পর্কে ভাঙন ধরে”।

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

ভাইরাল খবরের বিস্তারিত অংশটি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সেখানে মিথিলা-সৃজিতের বিচ্ছেদ সম্পর্কিত কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি। খবরটি মূলত বিভিন্ন সময়ে সৃজিত মুখার্জীর প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে পুনরায় অনুসন্ধান করা হলে ৯ নভেম্বর, ২০২০ সালের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। “মিথিলার স্বামীর ৬ প্রেমিকা কে কী করছেন” শিরোনামে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের সাথে বর্তমানে ভাইরাল খবরটি সম্পূর্ণ মিলে যাচ্ছে। শুধুমাত্র শিরোনামটি ভিন্ন।

সম্প্রতি ভাইরাল খবর

মূল খবর

অর্থ্যাৎ, ২০২০ সালের ভিন্ন একটি খবরের শিরোনামে বদলে দাবি করা হচ্ছে যে মিথিলা-সৃজিতের বিচ্ছেদ হতে যাচ্ছে।

এছাড়া নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম কিংবা সৃজিত বা মিথিলার সামাজিক মাধ্যমগুলোতেও এমন দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বরং সৃজিত মূখার্জী এবং রাফিয়াত রশিদ মিথিলা উভয়ের উইকিপিডিয়া পেজে স্ত্রী এবং স্বামী হিসেবে একে অপরের নামই দেখা যাচ্ছে।


অতএব, নিশ্চিতভাবেই বলা যাচ্ছে পুরানো একটি খবরের শিরোনাম পালটে সৃজিত-মিথিলার বিচ্ছেদের খবরটি ভাইরাল হচ্ছে। এর পিছনে কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

Leave a Reply