যুক্তরাষ্ট্র কি ড. মুহম্মদ ইউনূসের ছবি-সম্বলিত কোনো মুদ্রা চালু করেছে?  

Published on: January 21, 2024

যা দাবি করা হচ্ছেঃ এটা যুক্তরাষ্ট্রের চালু করা ড. মুহম্মদ ইউনূসের ছবি-সম্বলিত মুদ্রার ছবি।

অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছেঃ দাবিটি মিথ্যা। নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূস ২০১৩ সালের ১৭ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল গ্রহণ করেছিলেন। ভাইরাল পোষ্টগুলোতে মুহম্মদ ইউনূসের ছবি সম্বলিত মুদ্রা দাবিতে যে ছবিটি দেখা যাচ্ছে, সেটা হচ্ছে  সেই কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেলের ব্রোঞ্জ ডুপ্লিকেট। এটা কোনো মুদ্রা নয়। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি-সম্বলিত কোনো মুদ্রা প্রচলন করার প্রমাণ নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে পাওয়া যায়নি।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিটি সত্যিই যুক্তরাষ্ট্রের চালু করা ড. মুহম্মদ ইউনূসের ছবি-সম্বলিত কোনো মুদ্রার কি না — এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য শুরুতেই এটা ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের আওতাধীন দেশটির ব্যবসা-বাণিজ্য এবং মুদ্রা তৈরি সংক্রান্ত কর্মকান্ড পরিচালনাকারী একটি ব্যুরো ‘ইউনাইটেড স্টেটস মিন্ট‘-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে ভাইরাল হওয়া ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখান থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে,  এটা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে দেয়া কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেলের ব্রোঞ্জ ডুপ্লিকেট।

কংগ্রেসনাল মেডেলের অনুমোদন মার্কিন ফেডারেল সরকারের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা কংগ্রেস দিয়ে থাকে। এই মেডেল দ্বারা ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানকে তাদের বিশিষ্ট কৃতিত্ব এবং অবদানের জন্য পুরস্কৃত করা হয়। এটা যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা। যখন দেশটির আইন অনুমতি দেয়, তখন ‘ইউনাইটেড স্টেটস মিন্ট’ জনসাধারণের কাছে বিক্রির জন্য ব্রোঞ্জ ডুপ্লিকেট তৈরি করে।

২০১০ সালের ৫ অক্টোবর মার্কিন কংগ্রেস ড. ইউনূসকে এই পদকটির মাধ্যমে পুরস্কৃত করার অনুমোদন দেয় এবং ২০১৩ সালের ১৭ এপ্রিল তাকে এটা প্রদান করা হয়।

ড. ইউনূসের এই পদকটি গ্রহণ করার একটি ভিডিও দেখুন এখানে

অন্যদিকে, মূলধারার সংবাদমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি যার মাধ্যমে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে যুক্তরাষ্ট্র ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি সম্বলিত কোনো মুদ্রা চালু করেছে।

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে  ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh