সৌদি আরবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘটনাকে হিন্দু ধর্ম গ্রহণের ঘটনা বলে দাবি 

Published on: February 25, 2024

যা দাবি করা হচ্ছেঃ  সৌদি আরবে বিগত পাঁচ বছরে ৩ লক্ষ ৪৭ হাজার মানুষ হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছে।

অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছেঃ দাবিটি মিথ্যা। বাস্তবে এই দাবির সমর্থনে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পুবের কলম নামের ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম ‘সৌদি আরবে ৩ লক্ষ ৪৭ হাজার মানুষের ইসলাম গ্রহণ’ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেই প্রতিবেদনের কিছু শব্দ এবং ছবি পরিবর্তন ভাইরাল ছবিটি বানানো হয়েছে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোষ্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানঃ 

সৌদি আরবে সত্যিই ৩ লক্ষ ৪৭ হাজার মানুষ হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছে কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য শুরুতেই প্রাসঙ্গিক কিছু কি ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে এই দাবিটির সমর্থনে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে, পুবের কলম নামের ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে গত ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত “সৌদি আরবে ৫ বছরে ৩ লক্ষ ৪৭ হাজার মানুষের ইসলাম গ্রহণ” শির্ষক একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে সৌদি আরবের ইসলামি অ্যাফেয়ার্স, দাওয়া ও গাইডেন্স বিষয়ক মন্ত্রকের বরাত দিয়ে  জানানো হয় যে, বিগত পাঁচ বছরে সৌদি আরবে ৩ লক্ষ ৪৭ হাজারেরও বেশি মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছেন।

তাছাড়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং সৌদি আরব ভিত্তিক কিছু মূলধারার সংবাদমাধ্যমেও এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে

পরবর্তিতে পুবের কলমের ই-পেপার ভার্সনে সৌদি আরবে ৩ লক্ষ ৪৭ হাজার মানুষের ইসলাম গ্রহণ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদনে লেআউটের সাথে ভাইরাল হওয়া ছবিটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। মূল  প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির স্থানে দেবতা গণেশের ছবি এবং যে সকল স্থানে ইসলাম শব্দটি আছে সেখানে হিন্দু এবং সনাতন এই শব্দগুলো জুড়ে দেয়া হয়েছে। এই শব্দগুলোর টেক্সটের ধরণ, ফন্টের আকারের সাথে মূল টেক্সটের মিল পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, ভাইরাল ছবিতে সৌদি আরবে ৩ লক্ষ ৪৭ হাজারেরও বেশি মানুষের হিন্দু ধর্ম গ্রহণ সংক্রান্ত তথ্যের উৎস হিসেবে সৌদি আরবের হিন্দু অ্যাফেয়ার্স নামের একটি মন্ত্রকের কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে সৌদি আরবে এমন কোনো মন্ত্রকের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি বরং সেখানে ইসলামি অ্যাফেয়ার্স, দাওয়া ও গাইডেন্স বিষয়ক মন্ত্রক খুঁজে পাওয়া যায়।

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে বিকৃত হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh