লাইভে এসে সাকিব আবারও ব্যারিস্টার সুমনকে মারার হুমকি দিয়েছেন?

Published on: February 5, 2024

যা দাবি করা হচ্ছে: লাইভে এসে ব্যারিস্টার সুমনকে আবারো মারার হুমকি দিলেন সাকিব আল হাসান।

অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছে: দাবিটি মিথ্যা। ভাইরাল ভিডিওগুলোতে লাইভে এসে সাকিবের এমন হুমকি সম্পর্কিত কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সেখানে আলোচিত দাবিটির সাথে সাকিবের আলাদা আলাদা লাইভ ভিডিওর ফুটেজ দেখতে পাওয়া যায় যেগুলো সম্পুর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটের। অন্যদিকে, মূলধারার সংবাদমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো উৎস থেকে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, যার মাধ্যমে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সাকিব আল হাসান লাইভে এসে আবারও ব্যারিস্টার সুমনকে মারার হুমকি দিয়েছেন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলো সত্যিই লাইভে এসে ব্যারিস্টার সুমনকে আবারো সাকিব আল হাসানের মারার হুমকি সংক্রান্ত কি না — এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য শুরুতেই এগুলো বিশ্লেষণ করে দেখে ফ্যাক্টওয়াচ টিম। কিন্তু ভিডিওর কোথাও সাকিব ব্যারিস্টার সুমনকে মারা সংক্রান্ত কিছুই বলেননি।

পরবর্তিতে ভিডিওগুলোর বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করে ভিডিও ফুটেজগুলোর উৎস খুঁজে পায় ফ্যাক্টওয়াচ টিম। সেখানে দেখা যায় যে, ভিন্ন ভিন্ন দুইটি ঘটনার প্রেক্ষিতে সাকিব আল হাসান আলাদা আলাদা দুইটি ভিডিওবার্তা দিয়েছিলেন যার ফুটেজ বিভিন্ন ভাবে জোড়া লাগিয়েই আলোচিত ভিডিওগুলো বানানো হয়েছে।

এদের মধ্যে একটি হচ্ছে ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সাকিবের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে আপলোড করা লাইভ ভিডিওর অংশ। সেখানে তিনি মূলত OPPO মোবাইল ব্র্যান্ডের একটি ক্যাম্পেইনের ব্যাপারে বলছিলেন।

অন্যটি হচ্ছে কলকাতা ভ্রমণের সময় সাকিবের এক ভক্তের ফোন ভাঙা এবং সেখানকার একটি কালীপূজায় যোগদান করাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কের প্রেক্ষিতে তার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর দেয়া একটি ভিডিও বার্তার অংশ। তার বিরুদ্ধে কালীপূজার উদ্বোধন করতে যাওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি তাকে “নাস্তিক” উপাধিও দেয়া হয়েছিল। এই ঘটনার ব্যাখ্যা হিসেবে সাকিব ভিডিওবার্তায় বলেন যে, যার ফোন ভাঙা নিয়ে কথা হচ্ছে, তার ফোনটা কখনোই তিনি ইচ্ছেকৃতভাবে ভাঙেননি এবং তিনি কখনোই পূজার উদ্বোধন করেননি বা উদ্বোধন করতে যাননি। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় এক ভক্ত অনুমতি ছাড়াই স্বাস্থ্যবিধি না মেনে তার সাথে ছবি তোলার চেষ্টা করেছিল। তখন তাকে সরিয়ে দিতে গেলে ওই ব্যক্তির ফোন হাত থেকে পড়ে যায়।

উল্লেখ্য, ব্যারিস্টার সুমনের ফেসবুক পেজ থেকে ২০২৩ সালের ১৬ই মার্চ আপলোড করা একটি ভিডিও পোষ্টে তিনি সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন যে, হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমন উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় সাকিব তাকে দেখে মারতে আসেন। মূলধারার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে

তবে, মূলধারার সংবাদমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো উৎস থেকে লাইভে এসে ব্যারিস্টার সুমনকে আবারো মারার হুমকি দেয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তাই, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh