হলে তারাবির নামাজ পড়ার জন্য পিটানোর ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়

Published on: March 24, 2024

যা দাবি করা হচ্ছে: ‘হলে তারাবির নামাজ পড়ায় ৫ শিক্ষার্থীকে পেটানোয় ২জন আটক’ এমন তথ্য সম্বলিত বাংলাভিশনের একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে এই কার্ড শেয়ার করে ক্যাপশনে একে বাংলাদেশের ঘটনা বলে দাবি করছেন।  

অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছে: অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের। একারণে ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া উক্ত পোস্টগুলোকে “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে চিহ্নিত করছে। 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কয়েকটি পোস্টের নমুনা দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান : ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ দেওয়া আছে ১৮ই মার্চ, ২০২৪। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে বাংলাভিশনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ BanglaVision এ ১৮ ই মার্চ তারিখে উক্ত ফটোকার্ড সম্বলিত একটি পোস্ট পাওয়া যাচ্ছে।  পোস্টের ক্যাপশনে লেখা ছিলো ‘মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে…’। উক্ত পোস্টের কমেন্টে সম্পূর্ণ সংবাদের লিংক দেওয়া আছে।

১৮ মার্চ, ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত বাংলাভিশনের উক্ত সংবাদ থেকে জানা যাচ্ছে ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারতের গুজরাটের। ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে তারাবির নামাজ পড়ায় বিদেশি পাঁচ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত হিতেশভাই ও ভারতভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে আরও ৭ জনকে ধরার চেষ্টা চলছে।

এই ঘটনার মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে হলের সামনের চত্ত্বরে তারাবির নামাজ আদায়ের সময় একদল যুবক বাধা দেয়। মসজিদে না গিয়ে হলে তারাবি পড়া নিয়ে আপত্তি তুললে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই ছাত্রদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়। ভাঙচুর করা হয় বিভিন্ন রুমে থাকা আসবাবপত্র, শিক্ষা সরঞ্জাম ও হলের বাইরে রাখা একাধিক মোটরসাইকেল। আহত হয়েছেন আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, তুর্কমেনিস্তানের একজন করে এবং উত্তর আফ্রিকা থেকে যাওয়া দু’জন শিক্ষার্থী।

তবে এই ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে ‘এক্সে’ স্ট্যাটাস দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধির জেইশওয়াল।

ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে তারাবির নামাজ পড়ায় বিদেশি পাঁচ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনাটি নিয়ে ভারতের  প্রথমসারির বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। সেগুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

অর্থাৎ , এটা নিশিত যে , শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে তারাবির নামাজ পড়ায় শিক্ষার্থী পেটানোর ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারতের গুজরাটের। তাই যেসব ফেসবুক পোস্টে একে বাংলাদেশের ঘটনা হিসেবে দাবি করছেন , ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া সেসব পোস্টগুলোকে ‘বিভ্রান্তিকর’ হিসেবে চিহ্নিত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh