মেয়ে পালিয়ে যাওয়ায় বাবা-মায়ের আত্মহত্যার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়

Published on: February 27, 2024

যা দাবি করা হচ্ছে: “প্রেমিকের সঙ্গে মেয়ে পালিয়ে যাওয়ায় বাবা-মায়ের আত্মহত্যা”- এমন দাবি সংবলিত একটি ফটোকার্ড সম্প্রতি ফেসবুকে শেয়ার হতে দেখা যায় ডিবিসি নিউজের ফেসবুক পেইজ থেকে।

ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত: দাবিটি বিভ্রান্তিকর। প্রেমিকের সঙ্গে মেয়ে পালিয়ে যাওয়ায় বাবা-মায়ের আত্মহত্যার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। মূল ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দক্ষিণ কেরালার কোল্লাম জেলার পাভুম্বা একটি গ্রামে। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এসব পোষ্টগুলোতে নির্দিষ্ট কোনো স্থানের উল্লেখ না থাকায় আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এটি হয়তো বাংলাদেশের ঘটনা। এতে সাধারণ নেটিজেনদের অনেকেই সেটিকে বাংলাদেশের ঘটনা ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

গুজবের উৎস:

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলো এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানেএখানে। 

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

ভাইরাল এই খবরটি অনুসন্ধান করে মূলধারার গণমাধ্যম ডিবিসি নিউজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে ব্যবহৃত ফটোকার্ডে উক্ত ঘটনাটির স্থানের উল্লেখ না থাকলেও, এর কমেন্টে দেয়া মূল খবরের শিরোনাম থেকে জানা যায় ঘটনাটি ভারতের। পরবর্তীতে এই ফটোকার্ডটিকেই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।

প্রতিবেদনটির বিস্তারিত অংশ পড়ে জানা যায় যে, দক্ষিণ কেরালার কোল্লাম জেলায় পাভুম্বা গ্রামের কলেজ পড়ুয়া এক মেয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন বাবা-মা। মৃতের নাম উন্নিকৃষ্ণ পিল্লাই এবং বিন্দু। গণমাধ্যমটি এই তথ্যের সূত্র হিসেবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম  “আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন”কে ব্যবহার করেছে।

 প্রতিবেদনটি নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য কিছু প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম  আনন্দবাজার পত্রিকার ওয়েবসাইটে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখান থেকে জানা যায় যে, বাবা-মা বাধা দেয়া সত্ত্বেও মেয়ে বারণ না শুনে পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। মেয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার পর দুঃখে আত্মহত্যা করেন বাবা-মা। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

 উল্লেখ্য, যেহেতু ভাইরাল এসব ফেসবুক পোস্টে জায়গার নামের উল্লেখ নেই তাই সাধারণ নেটিজেনদের অনেকেই এটিকে বাংলাদেশের ঘটনা ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছে।

বিভ্রান্তির কিছু নমুনা নিচে তুলে ধরা হল:

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফেসবুকে শেয়ার হওয়া ফটোকার্ডটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh