শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট পরা নিষিদ্ধ করার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় 

Published on: April 1, 2024

সম্প্রতি একটি ফেসবুকে পোস্টে দাবি করা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পোস্টটির শুরুতে Journey to Banglasthan এবং শেষে হ্যাশট্যাগ বাংলাদেশ লেখা হয়েছে। যার কারণে মনে হয়েছে এই ঘটনাটি বাংলাদেশের। তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জিন্স ও টি-শার্ট পরা নিষিদ্ধ করার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। মূল ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্রে। সেখানকার সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পোশাক নীতিমালা বিষয়ে এমন একটি ঘোষণা দিয়েছিল। সঙ্গত কারণে ভারতের সংবাদ বাংলাদেশের বলে দাবি করায় ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “বিভ্রান্তিকর” আখ্যা দিচ্ছে। 

গুজবের উৎস: 

ভারতের এই সংবাদটি বাংলাদেশের গণমাধ্যমে “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট পরা নি’ষিদ্ধ” শিরোনামে প্রকাশিত হয়। শিরোনামটিতে নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা স্থানের উল্লেখ নেই। যে কারণে সংবাদটি দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি হয়তো বাংলাদেশের ঘটনা। যার ফলে সাধারণ ব্যবহারকারীদের অনেকে বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা ভেবেছেন। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

উক্ত সংবাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড ধরে গুগলে সার্চ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, বাংলাদেশের গণমাধ্যম “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট পরা নি’ষিদ্ধ” শিরোনামে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তার বিস্তারিত অংশে জানিয়েছে, ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার একটি নির্দেশিকা দিয়েছে যে, শিক্ষক ও শিক্ষিকারা এখন আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জিন্স ও টি-শার্ট পরতে পারবেন না। শিক্ষিকারা স্কুলে জিন্‌স এবং টি-শার্ট পরে আসতে পারবেন না। এমনকি গাঢ় রং, নকশা করা বা ছাপা পোশাকও পরে আসা যাবে না। শাড়ি পরতে পারবেন শিক্ষিকারা। সালোয়ার-কুর্তা পরলে তার সঙ্গে ওড়না থাকতে হবে। শিক্ষকরাও জিন্‌সের প্যান্ট বা টি-শার্ট পরে আসতে পারবেন না। শোভনীয় জামা এবং প্যান্ট পরে আসতে হবে। জামা ছেড়ে রাখলে হবে না। গুঁজে পরতে হবে। 

এ পর্যায়ে এই সংবাদটির মূল উৎস সম্পর্কে জানতে কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করা হয়। সেখান দেখা যায় ভারতীয় গণমাধ্যম India Today বিষয়টির উপরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম হলো- “Maharashtra introduces dress code for school teachers, t-shirts, jeans not allowed”। তাছাড়া একই ঘটনার উপরে The Indian Express পত্রিকা থেকে যেই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তার শিরোনাম হলো- “No jeans and t-shirts, wear salwar or churidar: Maharashtra govt issues dress code for teachers” 

লক্ষনীয় যে, ভারতে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে যে সকল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সেখানে সংবাদের শিরোনামেই ঘটনাস্থলের উল্লেখ আছে। অথচ বাংলাদেশের গণমাধ্যমের শিরোনামে স্থানের উল্লেখ নেই। যার ফলে স্বভাবতই জনসাধারণ বিভ্রান্ত হয়েছেন। বিভ্রান্তির কিছু নমুনা নিচে দেখানো হলোঃ 

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সংবাদটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh