বেনাপোল এক্সপ্রেস অগ্নিকাণ্ডে নিহত দাবিতে অন্য পরিবারের ছবি প্রচার

Published on: January 8, 2024

সম্প্রতি ফেসবুকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত পরিবারের ছবি দাবি করে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ছবিটি স্ত্রী-সন্তানসহ আগুনে পুড়ে মরা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির পরিবারের ছবি নয়, বরং ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট নন এমন এক ব্যক্তির পরিবারের ছবি। সেই ব্যক্তির নাম চঞ্চল বর্মণ, যিনি ইতোমধ্যে তার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে পোস্ট দিয়ে এ মিথ্যা প্রচারণা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “মিথ্যা” আখ্যা দিচ্ছে।

গুজবের উৎস

গত ৫ জানুয়ারি রাত ৯টা নাগান ঢাকার গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায়, তাদের মধ্যে একজন নিহত ব্যক্তি (এখন পর্যন্ত অজ্ঞাতনামা) আগুনে পুড়ে মৃত স্ত্রী ও সন্তানকে রেখে ট্রেনের কামরা থেকে বের হতে অস্বীকৃতি জানিয়ে মৃত্যুকে বেছে নেন। উক্ত ব্যক্তির পুড়ে যাওয়া ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ সম্পর্কে সংবাদ প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে

গত ৬ জানুয়ারি থেকেগতকাল বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের অগ্নিকাণ্ডে এই স্ত্রী ও তার সন্তানের পুড়ে যাওয়ায় নিজের জীবনটাও বিলিয়ে দিয়েছেন এই ভাই” ক্যাপশনে ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট ও রিল আকারে ছড়িয়ে পড়ে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় চঞ্চল বর্মণ নামক একজন ব্যক্তি তার স্ত্রী ববিতা রায়কে ট্যাগ করে ভাইরাল পোস্ট সম্পর্কে সতর্কতামূলক একটি পোস্ট দেন। তিনি লেখেন – আমার এই ছবি নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপে কেউ ভুয়া নিউজ ছড়াচ্ছে, দয়া করে কেউ বিশ্বাস করবেন না।

চঞ্চল বর্মণের প্রোফাইল সন্ধান করে ভাইরাল পোস্টের ছবিটি পাওয়া যাচ্ছে। মূল ছবি গত বছরের ২১ অক্টোবর তিনি পোস্ট করেছিলেন।

চঞ্চল বর্মণের স্ত্রী ববিতা রায়ও তার প্রোফাইল থেকে তাদের পরিবারের ছবি ব্যবহার করে ভুয়া পোস্টের ব্যাপারে সতর্কতামূলক পোস্ট করেছেন। এ দম্পতির প্রোফাইল ঘুরে অন্যান্য ছবি দেখেও নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ভাইরাল ছবির ব্যক্তিরাই এনারা। এছাড়াও তাদের ফেসবুক কর্মকাণ্ড থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে যে উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট নন।

স্পষ্টতই, ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট নন এমন এক পরিবারের ছবিকে ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত পরিবারের ছবি দাবি করে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তাই সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে ‘মিথ্যা’ সাব্যস্ত করছে।

সংশোধনী: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ এ প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটির ফিচার ইমেজে ভুল ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল বিধায় সেটা পরিবর্তন করে নতুন ছবি যুক্ত করা হল। রেটিং অপরিবর্তিত রয়েছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh