“খেলার মাঠে গরু প্রবেশ করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ”- বিভ্রান্তিকর

 

২৬ জুলাই ২০২১ তারিখে “খেলার মাঠে গরু ঢুকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ”- শিরোনামে একটি সংবাদ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। সংবাদটি সঠিক হলেও সেখানে ব্যবহৃত ছবিটি ২০১৬ সালের। ছবিটিও ব্রাক্ষণবাড়িয়ার ভিন্ন দুটি অঞ্চলের মধ্যে ঘটে যাওয়া একটি সংঘর্ষের। একই জেলার একটি অঞ্চলের সংঘর্ষের খবরের সাথে পাঁচ বছর আগে ঘটে যাওয়া অন্য একটি অঞ্চলের ছবি জুড়ে দেয়ায় পাঠক বিভ্রান্ত হতে পারেন। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই খবরটিকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে আখ্যায়িত করছে।

২৬ জুলাই ২০২১ তারিখে সংবাদটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। “সময়” এবং “radioshongi.com”-সহ আরো কয়েকটি ফেসবুক পেজের বরাত দিয়ে সংবাদটি ভাইরাল হতে দেখা যায়। এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে


বিষয়বস্তু

ভাইরাল হওয়া এই সংবাদে দাবি করা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে খেলার মাঠে গরু ঢুকে  পড়া নিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেখানে ২০ জনের মত আহত হয়। এই সংবাদের সাথে একটি ছবিও ব্যবহার করা হয়। সেখানে দেখা যায়, ২০ থেকে ৩০ জন মানুষ দেশীয় অস্ত্র হাতে মুখোমুখি অবস্থান করছে।

অনুসন্ধান

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল হওয়া এই সংবাদে যে ঘটনার কথা উল্লেখ করা হচ্ছে তা সত্য। মূলধারার কয়েকটি গণমাধ্যমও এই সংবাদটি প্রকাশ করেছে। “rtvonline.com” এবং “banglatribune.com“- উক্ত ঘটনায় আহতদের ছবিসহ দুইটি আলাদা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।


কিন্তু অনেকগুলো ফেসবুক পোস্টে দেখা গিয়েছে একই সংবাদের সাথে ভিন্ন একটি ছবি ব্যবহার করতে। “গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ”- এর সাহায্যে দেখা যায় ব্যবহৃত এই ছবিটি ২০১৬ সালের। ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬ তারিখে “50 injured in B’baria clash”- শিরোনামে  “Daily Sun” একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে এই পুরনো ছবিটি ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ, উপরোল্লিখিত সংবাদগুলোতে যে ছবিটি ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হলেও তা আজ থেকে কমপক্ষে পাঁচ বছর পুরনো এবং ভিন্ন একটি সংঘর্ষের।

২০১৬ সালের ওই ঘটনার বিস্তারিত জানতে “Daily Sun”- এর প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

অন্যদিকে, “bd24live.com”- নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এই একই ঘটনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে “প্রতীকী” ছবি হিসেবে ২০১৬ সালের ওই ছবিটি ব্যবহার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বাকি নিউজ পোর্টালগুলো এই ছবিটিকেই সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার ছবি ভেবে, কোনো ধরনের ক্যাপশন ছাড়াই প্রকাশ করে যাচ্ছে। যার ফলে মানুষের মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।

সিদ্ধান্ত

ভাইরাল হওয়া এই সংবাদগুলোর বেশিরভাগের বেলায় যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি পুরনো এবং একই এলাকায় ঘটে যাওয়া ভিন্ন একটি সংঘর্ষের। ছবি এবং ঘটনা একই জেলায় কাছাকাছি এলাকায় হওয়ায় পুরনো ছবিটি পাঠককে বিভ্রান্ত করতে পারে। এর মধ্যে মাত্র একটি পোর্টাল ছবিটিকে “প্রতীকী” বলে একটা ডিসক্লেইমার দিয়েছে। কিন্তু বাকি পোর্টালগুলো সেরকম কিছুই লিখে নি। ফলে ফ্যাক্টওয়াচ এই প্রতিবেদনটিকে বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিচ্ছে।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

 

Leave a Reply