Published on: June 4, 2023
![]() |
ভাইরাল পোস্টগুলো দেখুন এখানে , এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:
ফেসবুকে ভাইরাল পোস্টের ছোট সাপ হাতে ধরে রাখা ছবিটি গুগল ইমেজ সার্চ দিলে Deviant art নামক একটি ওয়েবসাইটে উক্ত ছবিটি পাওয়া যায়। Deviant art ওয়েবসাইট থেকে জানা যায় উক্ত ছবির ফটোগ্রাফার ছিলেন Robert Kemmerer। সাপের ছবিটি আপলোড করে Robert Kemmerer ক্যাপশনে লেখেন “রাতে বাইরে ব্লাইন্ড স্নেকের ছবি ক্যামেরা বন্দী। ছবিটি পর্যালোচনা করার পরে আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে সাপটি যখন আমার আঙুলটি কামড়াতে চাইছিল তখন দেখতে মনে হচ্ছিল এটা হাসছে। ফটোশুটের সময় কোন প্রাণী আহত হয়নি এবং সাপটিকে একজন প্রতিনিধি দ্বারা উপস্থাপন করা হয়েছিল।” Robert Kemmerer ছবির বিবরণও ক্যাপশনে দিয়েছেন।
তবে রেজুলেশন কম থাকায় ভাইরাল পোস্টের রেফ্রিজারেটরে থাকা সাপটির পরিচয় বের করা সম্ভব হয়নি। গুগল ইমেজ সার্চেও নির্ভরযোগ্য উৎস পাওয়া যায়নি।
AZ Animals নামক প্রাণী সম্পকৃত একটি ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে থ্রেডস্নেককে ব্লাইন্ড স্নেকও বলা হয়। ব্লাইন্ড স্নেককে অনেকে কেঁচো ভেবে ভুল করে থাকে। ব্লাইন্ড স্নেকের প্রায় ২০০ প্রজাতির সাপ আছে। এই সাপগুলো সাধারণত এশিয়া, আফ্রিকা, সাউথ এবং সেন্ট্রাল আমেরিকার ট্রপিকাল (ক্রান্তীয়) অঞ্চলে পাওয়া যায়। এদের অধিকাংশ প্রজাতি ৬ ইঞ্চির বেশি লম্বা হয় না। ভাইরাল পোস্টগুলোতে বলা হয়েছে, বিষধর সাপটি ৩–৪ ইঞ্চির মতো লম্বা।
কিন্তু ব্লাইন্ড স্নেকের কোন প্রজাতির সাপ বিষাক্ত নয়।
সাপের বিষ পান করলে কি মানুষ মারা যায়?
(বাংলা ভাষায় পয়জন এবং ভেনম দুইটাকেই বিষ বলা হয়। এখানে ভেনম অর্থে বিষ শব্দটা ব্যবহার করা হবে।)
যুক্তরাজ্যের ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়ামের একটি নিবন্ধতে ড. রোনাল্ড জেনার বলেন বিষের অনুগুলো বড় হয়। এ কারণে তা শরীরের ত্বক ভেদ করে রক্তের সাথে মিশতে পারে না। তাই কেউ সাপের বিষ পান করলে সে মরবে না। কারণ টিস্যু ভেদ করে বিষ রক্তে মিশতে পারবে না। তারপর বিষ পাকস্থলিতে গেলে পাকস্থলির এসিড পেপটাইড এবং প্রোটিনের সাথে মিশে বিষ ধ্বংস করে দেবে।
সাপের বিষ পান করার পরে মানুষের তখনই ক্ষতি হতে পারে, যদি পাকস্থলিতে বাঁ খাদ্যনালিতে কোন ক্ষত থাকে। ক্ষত না থাকলে কোনো বিপদের আশংকা নেই।
অর্থাৎ, সাপের বিষ রক্তের সাথে না মিশলে কোন ক্ষতি নেই। মানুষের পাকস্থলির এসিড সাপের বিষকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোতে কোন উৎস উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া গণমাধ্যমেও সাপের বিষ মিশ্রিত দুধ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর কোন সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ভাইরাল পোস্টগুলোর সত্যতা অনুসন্ধান করে পূর্বে বাংলাদেশ থেকে রিউমার স্ক্যানার এবং ভারত থেকে Check4spam ফ্যাক্টচেক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
সিদ্ধান্ত:
যেহেতু ব্লাইন্ড স্নেকের সব প্রজাতিই নির্বিষ, এবং সাপের বিষ খেলে মানুষের মৃত্যু হয় না, তাই ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ভাইরাল পোস্টগুলোকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
|