বিটিআরসি মহাপরিচালক এহসানুল কবীরকে কানাডার ভিসা না দেয়ার গুজব

Published on: January 5, 2022

সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার হচ্ছে যেখানে বলা হয়েছে, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবীরকে ভিসা দেয়নি কানাডার দূতাবাস। মূলত তথ্যটি ভিত্তিহীন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ এহসানুল কবীরের সাথে ফ্যাক্টওয়াচ টিম এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার ভিসাটি প্রক্রিয়াধীন আছে। যেকোনো দেশে প্রবেশের জন্য ভিসার বিষয়টি খুবই গোপনীয় বিষয় যা সচরাচর পাবলিক পরিসরে প্রকাশ করা হয় না। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবীরকে কানাডার ভিসা না দেয়ার তথ্যটি যে সকল পেজ থেকে ছড়ানো হচ্ছে সেখানে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ নেই। সঙ্গত কারণেই তাই ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।

সম্প্রতি ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে শেয়ার হওয়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে।

উক্ত ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনটি হুবহু নিচে তুলে ধরা হল:

“সেনাবাহিনীর উপরে নিষেধাজ্ঞার আলামত!
এই জিওর ৪ নং ব্যক্তি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবিরকে ভিসা দেয়নি কানাডার দূতাবাস। ৩ এবং ৫ নম্বরকে দিয়েছে, ১ ও ২ নম্বর সেংশনের আগেই ঘুরে আসছে।
সব মিলিয়ে আলামত সুবিধার না সেনা কর্মকর্তাদেরও রেসট্রিকশন করা শুরু করলো যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা প্রশাসন। নতুন করে দুঃচিন্তা ছড়িয়ে পড়েছে ক্যান্টনমেন্টে!

ভাইরাল পোস্টগুলোতে যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে তা মূলত ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি নথি যা ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রধান হিসাব কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে উপ-সচিব সাজ্জাদ হোসেন দ্বারা প্রেরিত হয়েছিল ৭ অক্টোবর ২০২১ তারিখে। নথিটি থেকে জানা যায়, এটি টিকেসি টেলিকমের আয়োজনে কানাডার মন্ট্রিয়ালে ১১ থেকে ১৫ অক্টোবর ২০২১ অথবা এর নিকটবর্তী সময়ে (ভ্রমণের সময় বাদে) একটি প্রাক চালান পরিদর্শনে অংশগ্রহণের সরকারি সম্মতিপত্র। এর অর্থ হল, উল্লেখিত সময়ের পরেও তিনি এই ভ্রমণের জন্য সরকারিভাবে উপযুক্ত গণ্য হবেন। ফলে, এমন কি তার সফরসঙ্গীদের ভ্রমণ সম্পন্ন হয়ে গেলেও ভিসা পাওয়া সাপেক্ষে বিটিআরসি মহাপরিচালক পরবর্তী কোনো সময়ে সেটি সম্পন্ন করতে পারেন।

ভাইরাল পোস্টটিতে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবীরকে ভিসা দেয়নি কানাডার দূতাবাস। ফ্যাক্টওয়াচ টিম এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার ভিসা টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন আছে।

উক্ত পরিদর্শনে এহসানুল কবীর ছাড়াও আরও যারা আমন্ত্রিত ছিলেন তাদের তালিকা নিচে দেয়া হল:

ভাইরাল ফেসবুক পোস্টটিতে বলা হচ্ছে, উক্ত তালিকার ৩ এবং ৫ নম্বর ব্যক্তিকে ভিসা দেয়া হয়েছে এবং  তালিকার প্রথম এবং ও দ্বিতীয় ব্যক্তি “নিষেধাজ্ঞা”র আগেই ঘুরে এসেছেন। বাস্তবে বাংলাদেশ থেকে কানাডা ভ্রমণে ভিসা পেতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক। কানাডা যে সকল দেশের ওপর বিভিন্ন কারণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেই তালিকায় বাংলাদেশ নেই। তালিকাটি নিচে দেয়া হল:

যেকোনো দেশে প্রবেশের জন্য ভিসার বিষয়টি খুবই গোপনীয় বিষয় যা সচরাচর প্রকাশ করা হয় না। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবীরকে কানাডার ভিসা না দেয়ার তথ্যটি যেসকল পেজ থেকে ছড়ানো হচ্ছে সেখানে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ নেই।

উল্লেখ্য যে, ৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে “আমেরিকায় প্রবেশ করতে পারেননি পলক” শীর্ষক একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছিলো বেশ কিছু ফেসবুক পেজ থেকে। সম্প্রতি বিটিআরসি মহাপরিচালক এহসানুল কবীরকে কানাডার ভিসা না দেবার গুজবও প্রায় একই উৎস  থেকে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। ফ্যাক্টওয়াচ থেকে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

উপরোক্ত তথ্যপ্রমাণ বিবেচনায় এবং ভাইরাল পোস্টগুলোতে দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ না থাকায় কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

Leave a Reply