জলমগ্ন রাস্তার ছবিটি বাংলাদেশের নয়

Published on: June 19, 2022

জলমগ্ন একটি পথে অসংখ্য মানুষের সমাবেশকে সিলেটের বর্তমান অবস্থা দাবি করে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এটি বাংলাদেশের ছবি নয়। ২০১৭ সাল থেকেই এটি ইন্টারনেটে বিভিন্ন দাবিতে দেখা যাচ্ছে। তুর্কী ফ্যাক্টচেকিং সাইট TEYIT এর দাবি অনুযায়ী এই ছবিটি বিখ্যাত লাহোর ক্যানেলের।  ফলে, ফ্যাক্টওয়াচ এই দাবিকে মিথ্যা বলে সাব্যস্ত করছে।

গুজবের উৎস

১৮ই জুন সকাল ১০টা ৩৭ মিনিটে উদ্যোক্তা পরিবার গ্রুপে জনৈক সুলতানা রাজিয়া মিম এই ছবিটা পোস্ট করেন।

পরবর্তী সময়ে অন্যান্য পেজ এবং গ্রুপেও এই ছবিটা সিলেটের সাম্প্রতিক ছবি দাবি করে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এমন কয়েকটা পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

 

এই ছবিটাকে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার ছবি হিসেবে দাবি করে ২০১৭ সালে একবার ভাইরাল হয়েছিল। সেই সময়ের কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে


বেশ কয়েকটা অনলাইন পোর্টাল সেই সময়ে এই ছবিটাকে আরাকান এর ছবি হিসেবে দাবি করেছিল। যেমন দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে  ।

teyit নামের তুরস্কের ফ্যাক্ট চেকিং সাইট এই ছবিটি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, এটা রোহিঙ্গা গণহত্যার ছবি নয়। বরং পাকিস্তানের লাহোর ক্যানেল এর সাথে এই ছবির মিল রয়েছে।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের লাহোর শহরের ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ জলপথ, যা লাহোর ক্যানেল নামে পরিচিত, বেশ জনপ্রিয় পর্যটন স্থল। অনেক পর্যটকই এখানে আসেন এবং পানিতে নেমে নিজেদেরকে শীতল করেন। লাহোর ক্যানেল এর অনেক ছবি ইন্টারনেটে দেখা যায়, যার সাথে আলোচ্য ছবিটির সাদৃশ্য রয়েছে।

২০১৭ সালের ১৪ই আগস্ট তারিখে পোখারা টুরিজম নিউজ নামক ওয়েব পোর্টালে একই ছবিটি দেখা যায়। এখানে এটাকে নেপাল এর সেই সময়কার বন্যার সংগৃহীত ছবি হিসেবে দাবি করা হয়।

১৮ই আগস্ট ২০১৭ তারিখে এই ছবিটা দেখা যায় ভারতের আরেকটি ওয়েব পোর্টালে। সেই খবরে বলা হয়, নেপালের বন্যার পানি সীমান্ত পেরিয়ে বিহারেও বন্যা সৃষ্টি করেছে। ভাইরাল ছবিতে নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা স্থানের নাম উল্লেখ না করে ক্যাপশনে লেখা হয়-জলমগ্ন হাইওয়ের ছবি।

গ্লোবাল গিভিং নামক একটি এনজিওর ওয়েবসাইটে নেপালের বন্যার পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা নিয়ে নভেম্বর,২০১৭ মাসের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রতিবেদনে নেপালের বন্যার ছবি হিসেবে আলোচ্য ছবিটিকে ব্যবহার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, ২০১৭ সাল থেকেই এই ছবিটা অনলাইনে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দাবিতে দেখা গিয়েছে। এটা কোনোভাবেই সিলেট এর সাম্প্রতিক বন্যার ছবি নয়। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই দাবিকে ‘মিথ্যা’ সাব্যস্ত করছে।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

Leave a Reply