মিয়ানমারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ভারতের মনিপুরের সহিংসতা দাবি

Published on: July 26, 2023

সম্প্রতি ফেসবুকে কিছু ছবি এবং ভিডিও শেয়ার হতে দেখা যাচ্ছে যার ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে এগুলো ভারতের মনিপুরে প্রকাশ্যে রাস্তায় এক তরুণীকে গুলি করে হত্যা করার ছবি। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিগুলো মণিপুরের সহিংসতার নয় বরং ২০২২ সালে মিয়ানমারে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স নামক একটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপ কর্তৃক একটি মেয়েকে গুলি করে হত্যার। এর সাথে মনিপুরের সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এই দাবিকে  “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ফেসবুকে ভাইরাল এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে। 

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান: 

ফেসবুকে শেয়ার হওয়া ছবিগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ছবিগুলো ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে Eleven Myanmar নামের মায়ানমারের একটি সংবাদমাধ্যমে ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে ফেসবুকে শেয়ার হওয়া ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের সদস্যরা মিয়ানমারের একজন তরুণীকে মারধর করার পরে গুলি করে হত্যা করে এবং হত্যার আগে  তাকে স্বীকার করতে বাধ্য করে যে তিনি একজন “সামরিক তথ্যদাতা।” 

এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিছু কি- ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করে মায়ানমারের অন্য আরেকটি সংবাদমাধ্যম The Irrawaddy এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে তামু টাউনশিপের স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে জানানো হয় যে, হত্যাকাণ্ডটি ২০২২ সালের জুন মাসে ঘটেছিল। সাগাইং অঞ্চলে পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) এর  সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছিল। 

 

উল্লেখ্য, ভারতের মণিপুর রাজ্যে সহিংসতা শুরু হয়েছিল গত ৩ মেএই রাজ্যের মৈতৈ ও কিকু সম্প্রদায় মধ্যে অর্থনৈতিক সুবিধা এবং কোটা সংক্রান্ত বিরোধ এই সহিংসতার কারণ।  তাছাড়া, জমি ও অবৈধ অভিবাসন নিয়ে বিরোধ গত কয়েক দশক ধরেই ছিল যা এই সহিংসতার বীজ হিসাবে কাজ করেছে।

অর্থাৎ, ফেসবুকে যে হত্যাকাণ্ডটির ছবি দেখা যাচ্ছে তা ভারতের মনিপুরে সহিংসতা শুরু হওয়ার অনেক আগেই ঘটেছিল। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে মণিপুরের সাম্প্রতিক সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh