“২৪ বছর পরও মাকে দেখা হলো না আমেরিকা ফেরত রুহুল আমিনের” – মগবাজার-বিস্ফোরণে নিহত রুহুল আমিন “আমেরিকা ফেরত” নন

Published on: June 28, 2021

সম্প্রতি মগবাজার বিস্ফোরণের প্রেক্ষিতে “২৪ বছর পরও মাকে দেখা হলো না আমেরিকা ফেরত রুহুল আমিনের” শিরোনামে একটি তথ্য ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। এসব পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়, ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার সময় মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন আমেরিকা থেকে আসা রুহুল আমিন। প্রকৃতপক্ষে, মগবাজার বিস্ফোরণে নিহত রুহুল আমিন আমেরিকা-ফেরত নন। তিনি ঢাকাতেই বসবাস করতেন।  ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান করে দেখে, ১৫ জানুয়ারি ২০২০ সালে রুহুল আমিন নামের একজন আমেরিকা প্রবাসী ২৪ বছর পর বাড়ি ফেরার পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিজয়নগর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। সে সময় উপরোক্ত শিরোনামে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়েছিল। একই শিরোনাম ব্যবহার করে, মগবাজার বিস্ফোরণে নিহত রুহুল আমিনকে “আমেরিকা ফেরত” রুহুল আমিন বলে চালিয়ে দিয়েছে কয়েকটি ফেসবুক পেজ।

“২৪ বছর পরও মাকে দেখা হলো না আমেরিকা ফেরত রুহুল আমিনের” — শিরোনামে ফেসবুক পোস্টগুলো দেখুন এখানে এখানে এখানে এখানেএখানে

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এসব পোস্টে দাবি করা হয়, দীর্ঘ ২৪ বছর প্রবাসে থেকে বাড়ি ফেরার সময় মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন আমেরিকা প্রবাসী রুহুল আমিন। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি মূলত ১৫ জানুয়ারি ২০২০ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। এই দুর্ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ‘beanibazarnews24.com’ নামের অনলাইন পত্রিকা পরের দিন (১৬ জানুয়ারি ২০২০) প্রতিবেদন প্রকাশ করে “২৪ বছর পর দেশে ফিরেও মায়ের মুখ দেখা হলো না আমেরিকা প্রবাসী রুহুলের!” এই শিরোনামে। একই শিরোনাম কপি করে মগবাজার বিস্ফোরণে নিহত রুহুল আমিনের মৃত্যুর সাথে এক বছর আগের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রবাসী রুহুল আমিনকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে এসব পোস্টে।

আমেরিকা-ফেরত রুহুল আমিনের মৃত্যু সংক্রান্ত প্রতিবেদনটির ভিডিও দেখুন এখানে

 

উল্লেখ্য, মগবাজার বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত মোট ৭ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) কমিশনার শফিকুল ইসলাম। ওদিকে সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদকেরা সরেজমিনে ছয়জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করতে পেরেছেন। পরবর্তীতে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে রুহুল আমিন নামের একজন ছিলেন। তবে তিনি আমেরিকা প্রবাসী নন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউডার ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৩ ব্যাচের ছাত্র। বিস্তারিত জানতে প্রথম আলোর “ছোট্ট নূহার প্রশ্ন বাবা কখন আসবে” শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

 

‘সাংবাদিক Journalist’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রুহুল আমিনের মৃত্যুকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্যটি ছড়ালে সেখানে ‘Kawshik Ahmed’ নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী পোস্টে মন্তব্য করেন জানান, “মিথ্যা সংবাদ প্রচার থেকে দূরে থাকুন। রুহুল আমীন ভাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তিনি স্ত্রী ও সন্তান রেখে গেছেন ও সে বাংলাদেশেই চাকরি করতেন।”

 

ইউডার ইলেকিট্রক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ালেখা শেষে ‘রহমান রহমান অ্যাসোসিয়েট’ নামের একটি কোম্পানি চাকরি করতেন নোমান। প্রতিদিনের মতো মগবাজার চৌরাস্তার মোড় অফিস শেষে মালিবাগ বাসায় ফিরছিলেন তিনি। হঠাৎ বিস্ফোরণে ভবনের ছাদ ভেঙ্গে অন্যদের ন্যায় নোমানও ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। যুগান্তরের প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

Leave a Reply